স্বপ্ন খুনের দায়
তুমিও এক দিন দণ্ডিত হবে স্বপ্ন খুনের দায়ে,
কিছু স্বপ্ন ঝলসে দিয়েছ
. কিছু স্বপ্নের চেপে ধরেছ টুঁটি
থেঁতলে দিয়েছ কিছু স্বপ্ন
কিছু করেছ গুম।
প্রতিটি স্বপ্নের হাহাকার আগলে নির্বাক হৃদয়।
নিরন্তর যে সূর্য মনের
আলো—উত্তাপে যার জেগে উঠে ডুবে যাওয়া
সেখানে কি কখনো দেখো না স্বপ্নহত্যার ছায়া?
কখনো কি খুলে দেখেছ সাদা থানে মোড়ানো
মেঘের কফিনে কতটা পচন ধরেছে স্বপ্নের?
ভারী বাতাসে ন্যুব্জ ভালোবাসায়
হৃদয় কতটা মুমূর্ষু?
কতটা অকালে ভুলেছি একাল-সেকাল?
জেনে রেখো,
তুমিও একদিন দণ্ডিত হবে স্বপ্ন খুনের দায়ে।
খাঁচা
মর্গের বাতাসে ঝরে পড়ে মননের ফুল
আপসের কালিতে লেখা সব শব্দই ভুল।
দাসত্বের এই যাত্রায় বেঁচে থাকাই এক মরণ
পচে পচে প্রতিদিন মৃত্যুকে করতে হয় স্মরণ।
বেঁচে থাকা তবু এক মৃত্যুর আশ্চর্য খনি
ক্ষমতায় খনন হওয়া নিরীহ মানুষের খুনি।
এসব নিয়ে নেই কারও কোনো প্রকার দায়
কেবলি ঘটনার পিঠে চেপে ঘটনা চলে যায়।
টিকে থাকার নেপথলিন দিয়ে নাক গুঁজে,
আমরা লাশের গন্ধ পাশ কাটাই মুখবুজে।
এভাবেই চলছে জীবন-উন্নয়নের রেশ
আহা, কী সুন্দরভাবে চারপাশ চলছে বেশ।
আদর্শ ও দুর্নীতির রূপকথা
ওরা দুজন প্রতিবেশী।
আদর্শ ও দুর্নীতি ওদের নাম।
আদর্শ—পরিত্যক্ত বেশ্যার মতো
পুরনো খদ্দেরের জন্য
হাহাকার করে দাঁড়িয়ে থাকা রূপহীন বৃদ্ধা।
দুর্নীতি—বহুগামী তরুণের মতো
ভোগের জলে স্নান করে
লুটপাটের তোয়ালেতে শরীর মুছে প্রসাধন-মাখা পুরুষ।
ওদের কারও সাথে কারও ভাব নেই।
রোজ চলে খিস্তিখেউড়।
আমাদের কারও কারও যৌবনে
কিংবা কেউ কেউ পরিত্যক্ত হলে
আদর্শের সাথে জুড়ে দেয় আলাপ
আলাপ শেষে চুপি চুপি মুখের মাপে মুখোশ পরে
দুর্নীতির ঘরে ফের জমায় তাসের আড্ডা।
আদর্শ ও দুর্নীতি আমাদের পাড়াতেই থাকে।
ওরা একই বয়সী হলেও একজন ক্রমশ বুড়িয়ে যায়।