শেষের চিঠি
নেমেছে কি অন্ধকার মৃত্যুর মতন
জীবনের মতো গাঢ় করেছ যতন
হৃদয়ে-হৃদয় যেন ছায়াতেও ছায়া
জীবনে-মরণে নাচে অবুঝের মন
নীলিমার ছেঁড়া ছেঁডা মেঘের আদর
উড়ে আসে ডানা মেলে, উড়ে যায় দূরে
আমরা শুধু বিস্ময়ে চেয়ে চেয়ে থাকি
ধূসরিমা পাণ্ডুলিপি-বুঝি যায় পুড়ে-
অপরূপ এক রাতে কুয়াশা চাদরে
কারা যেন ভেসে যায় মৃদু সে বাতাসে
কারা যেন খোঁজে রোজ শুকতারাটিরে
কামরাঙা দিন শেষে ধূসর আকাশে!
কতদিন যেন আমি দেখিনি তোমাকে
যেন কত যুগ আর কত কাল ধরে-
তবু আছি জীবনের আলোটুকু জ্বেলে
রাতজাগা কোলাহলে বিহ্বল-অন্তরে।
তোমার শেষের চিঠি শুধু পড়ে যাই
বেদনার পাখি এসে তবু গান গায়।
প্রিয় বাংলাদেশ
তোমার দুয়ারে রক্ত অরুণের জ্যোতি
বালুচরে দরিয়ায় উল্লাসের ঢেউ
দিগন্তে মিলিয়ে যাওয়া মরীচিকা-তৃষা
ভোরের আকাশে ওড়ে যায় বুঝি কেউ?
দূরের ধ্রুব তারার আলো জ্বেলে ধরো
একাকী পথিক ভেবে মুরালী বাজাও
সারি সারি মেহগনি শাড়ির আঁচল
রুপালি স্নানের আগে তাকেও সাজাও।
ঘাসের শরীরে বাড়ে অবহেলার ধুলো
কিশোরীর লাল পেডে জামার জরিতে
অথবা নব বধূর কাঁকনের ধ্বনিতে
কোন কৃষান সেদিন চেয়েছে মরিতে?
তার জন্মদিনে
জীবন যেন চিরদিনই অচিন পথের নাম
যে পথের নেই শেষ ঠিকানা, নেই কোনো শেষ ধাম
অনন্ত পথ, অনন্ত তার রেখা
চলতে চলতে ক্লান্ত হলেও যায় পথের দেখা!
জীবন চলার পথে যে কে আপন হয়ে ওঠে
কে যে আবার হঠাৎ করে দূরে চলে যায়
এসব হিসাব কে রাখে আর?
ব্যস্তপথের পথিক সবাই পথের শেষে ঠাঁই!
কিসের সে পথ, ঠাঁই মেলে না দিশের শেসে রাতও
নীল আকাশে পাখি ওড়ে, পায় কি খুঁজে বাসা?
দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে অনন্ত পথ ওঠে
মাটির গন্ধেই পাগল হয়ে ফিরে ফিরে আসা!
জীবন যেন স্বপ্নে পাওয়া অনেক রঙিন পাখা
বুকের ভেতর আকাশ কাঁপে জলের রঙে আঁকা।