মাতাল পাতার নিচে
কোনো বেলোয়াড়ি ঝড়ে আমি আর নেই। তোমার লুকানো গহ্বর
খাদময় পিচ্ছিল। উন্মাদনা সাদা হয়ে নিপাট বেদনাবৃষ্টি এখন।
ফুলেরাও ফুলদানি না পেলে বাড়িয়ে দেয় শোকের আয়ু। হরিৎমনে
ফুটে থাকা পাপড়ি সামান্য ঝড়েই পতন অভিমুখী হয়।
বিষাদে ঝড় ওঠে, আচানক নদী বয়ে চলে। প্রপঞ্চ সত্য হলে
পাপড়িগুলো অথই সমুদ্রে।
দেয়ালে টাঙায়ে রাখি নিষিদ্ধ আকাশ, প্রণয়ের কারুকলা
তুমি শুদ্ধের নাদান, ঘরে নিতে পারো না ফুলের প্রতিদান।
মাতাল পাতার নিচে দুটি পাখি পালক মেলে নিরাকারে ছোটে
প্রেমিক পরাশ্রয়ী হলে পেন্ডুলাম ঝুলে থাকে বেদনাবাতাসে।
অজস্র প্রেম চেয়ে আছে লক্ষ্যমুখে, কুহক আকাশে
আত্মবিশ্বাসী হলে কিছু প্রেম বাড়ে পৃথিবীতে খেলাচ্ছলে।
জলে-চরে-খাদে
রাতে প্রমাদের খাদ থাকে, আলোর অরণ্য থাকে না
অপ্রিয় সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ালে ঝাপসা লাগে চোখে
এই যে সরে যাচ্ছি দূর, অভাবের অভিধান খুলে
পাখিরাও পরিযায়ী হয় স্বভাবে, দূরত্ব ভালবেসে
খাঁজকাটা পথের ছাপে অগ্রজের পাপের পরিতাপ
আমি তার সহোদরা, আমাদের যৌথপ্রমাদ
পাতারাও পতনের যথাযথ দিক চেনে, গন্তব্যে নির্ভুল
নিরন্ন প্ররোচনায় আমাদের যৌথ পা গন্তব্যদিকভুল
শুকনো নদীর চর, আমি তার নুনমাখা বোন
জলজ রেখা এঁকে দুর্দিনে সরে যাচ্ছি সুদূর
চোখের পরিসীমা থির হলে পড়ে নিই পরিযায়ী মন
জলে-চরে-খাদে ফুটে আছে প্রাণময় বালির বন্ধন
সুলতার কোকিল উড়ে যায়
সুলতা—এখনো ফাঁকা মাঠ, উনুনে ফোটেনি তার আগুনের খই।
ঋতুবদলে জীবন বহিয়া যায়। আর সুলতার কোকিল উড়ে যায়।
একটা ভ্রমের পাখির আওয়াজ বহুদিন পিছু ধরেছে। মাটির গানেরা
সব আল ধরে চলে। একলক্ষ কামিনীর চারা পুঁতে যায়। আর ঋতুহীন
বীজ ফেলে যায়।
সুলতা—এখনো ফাঁকা মাঠ। মৌসুমে তার কোকিল উড়ে যায়।