সমীকরণ
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কলায় জন্ম নেওয়া ক্ষোভ ও ঘৃণা বেড়ে যাচ্ছে গাণিতিক হারে!
ক্রমান্বয়ে সরে যাওয়া পায়ের তলার মাটি গড়েছে উইপোকার ঢিবি। শত সুড়ঙ্গ তবু ভেতরটা অন্ধকার, নীরবে খেয়ে নেয় আয়ু। ঘুণে খাওয়া নড়বড়ে খুঁটিতে মজবুত বেড়া দিয়ে পতন আটকে রাখার চেষ্টায় হেসে ওঠে নিম্নচাপ। সমবেত সুরে গাইছে ভাঙনের গান, ধ্বংসের দামামা বাজে দ্রিমিক দ্রিমিক দ্রাম দ্রাম!
অট্টহাসিতে ফেটে যায় স্বর!
রে পাতক! রে পামর!
এই বুঝি ছিঁড়ে গেলো তার,
হাহাকার, হাহা কার সমীকরণ ৩:৬।
ছলে, মিথ্যায়, অন্যায়ে, পাপে অর্জিত ক্ষমতা আর সম্পদের পাহাড়, পড়েই রইলো বারো ভূতে লুটেপুটে খাবে এবার!
প্রতিশোধ
প্রতীক্ষার শেষ হবে জানি একদিন। আমি আর দাঁড়িয়ে থাকবো না বারান্দায়! তোমায় দেখার প্রচণ্ড তৃষ্ণা নিয়ে বেরিয়ে যাবো ঘর থেকে, দশকদম দূরে বকুল তলে।
জানি, আমায় দেখার তীব্রতা ফুরিয়েছে, আগ্রহ ফুরায়নি। একদিন ফিরে আসবে, উসখুস করবে, ভেতরে ভেতরে ছটফটও করবে হয়তো। প্রাক্তন অভ্যাসে এক’পা দু’পায়ে আমার উঠানে আসবে জানি! সেদিন ভাঙা চৌকাঠে লোহার শিকলে দেখবে কেবল জং ধরা পুরানো তালা। দশ কদম দূরে বকুল তলে তোমার চোখ পড়বে না, পড়লেও আর আমায় দেখবে না! বকুল তলে উত্তরশিয়রী আমি শূন্য হাতেই ফিরিয়ে দেব। দেখবো তোমার বিমর্ষ প্রস্থান। সেদিন বুঝবে, আমিও ফেরাতে পারি তোমায়!
প্রদর্শনী সাকসেসফুল
যাদের জন্য উন্মুক্ত করেছ কামনীয় স্তনের সমৃদ্ধভাগ, তারা গোগ্রাসে গিলে নিচ্ছে ক্ষুধা, চোখের দূরত্ব মেপে মনে মনে হাতের জড়তা খুলে আয়েশে ঠোঁটে তুলে নিচ্ছে মদিয় নির্যাস। চোখের আর কী দোষ! চোখ তো সুন্দর আর যৌনতার আজন্ম কৃতদাস!
তোমার মখমলের মত মসৃণ পেলব দেহে গন্ধরাজের মতো ফুটে থাকা না-ঢাকা নাভির সৌন্দর্য বিতরণে পুড়ে মরছে পতঙ্গের মত কত, শত কামুক পুরুষ! তারা খাবি খাচ্ছে, লোলুপতায় ডুবছে, ডুবুরীর মতো কাম-গন্ধের তলদেশ থেকে খামচে নিচ্ছে মধু-অমৃত! চেটে নিচ্ছে বেভুলে নিজেরই ঠোঁট। তাদের আর কী দোষ! কামনা তো এক ছোঁয়াচে শিহরণ; দৃশ্যে, বাতাসে, নিঃস্বাসে ছড়ায় আক্রমণ।
ঊরুসন্ধির নামমাত্র আচ্ছাদন যে কেবল চৌম্বকক্ষেত্র লুকানোর ছল সে-কথা ভালোই জানে নারীলোভী সেয়ানা পুরুষের দল। একেবারে অঙ্ক নাজানা পুরুষটিও তখন ঊরুর দৈর্ঘ্যপ্রস্থ মেপে চৌম্বকক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল বের করে ফেলে। অতপর দৃষ্টিকে শিফট করে নেয় উৎসের প্রাচুর্যে!
তোমার যৌন-ভঙ্গিমায় তারা রতি ও ভীমরতির উন্মাদনায় দিকপাল দিশাহারা, শিরায় শিরায় জ্বলে দাবানল। তোমার দৈহিক অহিফেমে বুঁদ তাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়, ঝিনুক চিরে মুক্তো খুঁজার মতো তারা হাতড়ে বেড়ায় শূন্যে, কোলবালিশে, অন্তত কোনো তো একটা দেহ, হোক তা শিশু থেকে বৃদ্ধ!
তোমার উন্মুক্ত শরীর প্রদর্শনী সাকসেসফুল হয়।
বিপরীত আপন
তোমার প্রেমের গন্ধে ভেজা বাতাস
আমার শ্বাসে পোড়ে জৈষ্ঠ্যতাপে
তোমার সুখের রঙে আঁকা আকাশ
হারায় আমার লুকানো সন্তাপে।
তোমার হাসির ফোঁটানো বকফুল
ঝরে আমার বুকের প্রবীণ ঝড়ে
তোমার খুশির বেজে উঠা ঢোল
ভাঙে আমার ব্যথার সমাহারে।
তোমার ভালবাসায় ঘেরা ভুবন
ঢাকে আমায় আগলে রাখা দুখ
তুমি আমি দুই বিপরীত আপন
একের দহে জ্বলে দুয়ের বুক।