পাখিপ্রেম ও বৃক্ষের ঘর
নিঃশ্বাসহীন তাপিত নগরে বৃক্ষরা হারিয়ে যায়
বৃক্ষ না পেয়ে পাখিরা বিরহ ও ভালোবাসায় কাতরায়
দেখি, বৃক্ষহীন নগরে আমার ঘরের আলমারিতে বাসা বেঁধেছে
কয়েকটি বর্ণিল পাখি।
পাখি আসে স্বপ্ন নিয়ে, পাখি এসে স্বপ্ন বোনে হেথায়-সেথায়
পাখি থেকে পাখি আসে,
পাখির সাথে আবাস কোথায়?
পাখিগুলো সুর শোনাবে তেমন কোনো বৃক্ষ কোথায়?
ইট পাথরের বাসায় আমরা হৃদয় নিয়ে বন্দি থাকি
এত পাখি কোথায় রাখি!
পাখির জন্য বৃক্ষ কোথায়?
বৃক্ষ শাখায় পাতার আড়াল প্রেম-পার্বণ বাকুম-বাকুম
পাতার আড়াল সবুজ শাখার বৃক্ষ কোথায়?
পাখি প্রেমিক তোমায় বলি,
বৃক্ষ রোপো প্রেমের আগে।
পাখি তোমায় স্বপ্নমাখা ঘুমপাহাড়ে
ঘুম পাড়ানি গান শোনাবে, ঘুম জাগাবে
বৃক্ষ রোপণ খুব প্রয়োজন
তবেই হবে পাখি প্রেমের সব আয়োজন।
ছায়ালোক পেরিয়ে
হসপিটালের অপারেশন থিয়েটার থেকে
রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে অনবরত মর্মভেদী চিৎকার
ভেসে আসে মৃত্যুর নিকটবর্তী নগরে।
মৃত্যুর নগরে রাত দীর্ঘ হলে শ্মশানের দুর্গন্ধে
আকাশজুড়ে ভেসে আসে বিভৎস্যতার অলীকরঙা মেঘ
আগুনের মতো জ্বলে জ্বলে ওঠে সব মৃত্যুর চিৎকার
আতঙ্কিত চোখগুলো শান্ত সমর্পনে কোনো শূন্যগর্ভে পালাতে চায়
নগরের সমস্ত কবর থেকে শুয়ে থাকা পূর্বপুরুষেরাও
মর্মযাতনায় মাটি ভেদ করে উঠে আসতে চায়
আকাশ গম্ভীর হয়ে এক মহা দুঃশ্চিন্তার অভিভাবকের চেহারায়
ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে অনাগত অনিশ্চয়তায়
অবিরত চিৎকারগুলো মৃত্যুকে কাছে ডেকে যায়।
কোন ছায়ালোক পেরিয়ে মৃত্যু কাছে আসে?
এই এক অদৃষ্ট! স্ফূলিঙ্গের মতো মৃত নগর কেঁপে কেঁপে ওঠে
আর হসপিটালের অপারেশন থেকে ধেয়ে আসা
অদৃশ্যের চিৎকারগুলোর বিভৎস ভূমিকম্পের ভাইব্রেশনে
সুউচ্চ ভবনগুলো বিদ্ধস্ত করে দিলে
নিষ্প্রাণ দাঁড়িয়ে থাকে এক মৃত্যুর নগর
আর মানুষগুলো তারও আগে অভিশাপের শূন্যগর্ভে মিলিয়ে যায়।
গণিকা
দিন শেষে কে বা কার!
কী-ই বা কার! হোক না সে যার তার!
এই পাললিক প্রেমে হারিয়ে মুখোশ যার
যে পথে চলে গেছে সে…কাঁটাবন অন্ধঝোঁপে…
ডোরাকাটা খিদে যারে গিলেছে হিংস্র আঁধারে
সে কি আর আসে ফিরে নোনাজল চোখের কোটরে?
দিন শেষে কে-ই বা কার, সম্মুখে যে আঁধার!
ঢেউহীনা চাঁদজলে মীনেরা কী জীবিত, জীবিত কি এ নগর?
জল নেই এ শহরে, অনূঢ়া আষাঢ়…
শবের শহরে আলো শুনশান কবর অপর
সারমেয় চিৎকারে ভেসে আসে অচীন নগর।
কে বা কারে চিনে নেয় পাললিক প্রেমে,
শরীরে শরীরে মেখে অভিশাপের পলি…
দিন শেষে কে বা কার, কোন অন্তর্জলি!