আনন্দ ফুল
ফুটেছে আনন্দ ফুল নিতম্ভে তোমার
কদম্ব-ঘ্রাণে ঝরেছ নকুল দানায়
যেন ভাষার ভেতর থাকা নিদ্রিত সুর
সমূহ সমাহার নিয়ে জেগে উঠেছে
যেন কথার গভীর থেকে উঠে এসে
গাভীর প্রণয় কামধেনু হয়ে
অশ্বত্থেরে বলিতেছে, আয় প্রেমে পড়ি।
ঝিরঝির বাতাসে ঝিলমিল জলে বিম্বিত
এই নাম পুঁথির প্রাচীন পয়ার যেন
কবির কল্পনা হয়ে গেছে অতুল জনপদ
রাজ্য ও রাজকন্যার রূপালি শয্যা
এই সব মধুর কথা, প্রতীকী ধ্বনির কাছে
ঝরিতেছ তুমি, ঝরিতেছ অবিরল…
উষ্ণ সন্ধ্যার কাছে
উষ্ণ সন্ধ্যার কাছে বলে গেলাম
লক্ষ্মী পেঁচা কেন বনানীর আকাশে
মধ্যরাতের চেক পোস্টে
গম্ভীর মুখে কেন—
অশ্বত্থের পাতায় কেউ কি লিখে গেছে
শুধু এই শহরের রাতে একা একা
এবং আনমনে কান্না বারণ।
কেউ কি বলেছে, মানিক মিয়া অ্যাভিন্যুর কেউ?
তবে কেন এই নিশিডাক?
মসৃণ রাজপথে কেন ব্যারিয়ার এত?
ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া লাল করে আকাশ
তার নিচে ডগি ডগি মানুষের ছায়া
তাতে কোনো দোষ নেই
কণাদ-দৃষ্টি কেবল আমাকেই খোঁজে
রাত নেই, বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে, বাতাসে উড়ে গেছে কালো
রাতের রমণীরা ঠোঁট ভরে নিয়ে গেছে উষ্ণতা ও আলো
আমার সময় কই, সহচর কই
কার কাছে রেখে যাবো পেঁচকের অবহেলা
সিগনাল বাতিগুলো রাতভর অহেতুক রঙ বদলায়।
গ্লুমি গ্লুমি ঊনিশে বৈশাখ
আজ ঊনিশে বৈশাখ। আরেকটি মেঘময় দিন। গুমোট গুমোট, গ্লুমি গ্লুমি
তার কথা মনে থাকবে না। কোনো এক মাঠের দুপুরে একা দাঁড়িয়ে থাকা, অথবা জলপাই গাছের নিচে ধ্যানভঙ্গিমার কথা
সেদিন তো সোমবার ছিল। আজ কী বার? কোন তিথি? নক্ষত্র বিচারের কেউ নেই। এই নিস্তব্ধ শহরে শুধু যুদ্ধের সাইরেন বাজে। স্তব্ধ জলে বসে দিঘির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা নিছকই নিছক ছিল।
এই গম্ভীর দিন আজ। শেখাচ্ছে নানা কর্পোকৌশল। হত্যার বিবিধ সরঞ্জাম, শবাধার, ডার্ক ওয়েবের জাদু। শয্যা ভেসে যাচ্ছে নানা কিসিমের রক্তে, আর রক্তে
ওহ। আজ আরেকটি বছর পার হয়ে আরেকবার নিশ্বাস নেওয়া। কী যে স্মৃতিময়! উহ, আহ ধ্বনি! কী যে মধুর, মন্ত্রময়!
এত মানুষের ভিড়ে নিজেকে আর হতে হয় না একা। সম্পর্কহীন নৈকট্যে কে কাহার? কাহার কান্তা, পুত্র?
গ্লুমি গ্লুমি সকাল। নাস্তায় কত মৃত্যু সংবাদ। পৃথিবীর কোন প্রান্তে কত শিশু, কত কিশোর বুলেটে বিদ্ধ হল? কাদের আর্তনাদে ঝরে যায় পুষ্পসকল
আজ তবে রোববার। সময়ের এত ভার নিয়ে চলেছে ওই মৃদুগামী কচ্ছপ। মাটির পৃথিবী ছেড়ে ধীরে ধীরে, অতি সন্তর্পণে কোথাও।