ধুরো
ধুরো,
সাতসকালেই এসে গেল
কাঠকয়লা বুড়ো!
এসেই চ্যাঁচামেঁচি
ম্যাঁচামেঁচি, প্যাঁচাপেঁচি
থাক না বাবা ঘ্যাঁচাঘেঁচি
থাম না সোনা থাম
ঝরছে কেবল ঘাম
এত্ত চ্যাঁচামেঁচির মাঝে
উধাও আত্মারাম!
বলি, একটু না হয় থাম।
বুড়ো,
সাতসকালে এসে কেবল
খোঁজো গাছের গুঁড়ো।
গুঁড়ো খেয়ে পেটটা ভরে?
ঘাস খেতে তো পারো
পাতা, মাটি আরও
তা না,
সাতসকালে এসেই তুমি
দাও ঘুমেতে হানা।
ওই সময়ে ঘুমাই আমি
জানো না, জানো না?
ন্যাকামো
আকাশটা ফ্যাকাশে।
কীভাবে যে বুড়িটা
হলো বেশ ন্যাকা সে।
দেখো না তাকিয়ে
মুখটা কেমন করে
রেখেছে বাঁকিয়ে!
কান্না পেলে কাঁদে।
মেঘদিদিমার ভয়ে-
রোদটা ঝোলে ছাদে।
বুড়ি তবু ফ্যাকাশে
হলো ওমা, ন্যাকা সে!
এটা কিছু হলো
মাগো শোনো, বলো দেখি
শুনছ না তো, ওমা, সেকি!
ওই যে দেখো আকাশ-নীলে
মেঘে ছুঁইছুঁই রহন বিলে
হাজার হাজার পাখি মিলে
চাঁদটা কেমন খাচ্ছে গিলে!
আমার তো খুব ইচ্ছে করে
এক লাফেতে চাঁদের ঘরে
বুড়ির পাশে বসি
পাখিগুলো আনতে বেঁধে
আনো না মা রশি?
মাগো, শুনছ না তো কিছু
কান দুটো না করলে নিচু
যায় কি শোনা, বলো?
পাত্তা আমায় দিচ্ছ না যে মোটে
পিচ্চি বলে? এটা কিছু হলো?
বলো গো মা বলো
এটা কিছু হলো?
একটি ছেলে
বাসার পাশে একটি ছেলে
রোজই দেখি পা-টা মেলে
চুপচাপ বসে থাকে
কয় না কথা কারও সাথে
কেউবা কিছু দিলে হাতে
চটের ব্যাগে রাখে।
বললাম সেদিন, বাবা শোনো
এই দুনিয়ায় আছে কোনো
তোমার যারা স্বজন?
কান্না সে কী! ওমা, একি-
ওর বসাটা ভীষণ মেকি
বলল পাড়ার ক’জন!
নতুন পাড়া মানুষ নতুন
কে মোসাফির কে যে শকুন
যায় না মোটে বোঝা
জীবন মানে খল, ভাঁড়ামির
আস্তাকুঁড়ের ‘তুই’ হারামির
সত্যটাকেই খোঁজা।
ভূমিকা
তুমি তো তুমিই
এক উর্বর ভূমিই
তোমার জন্য কাঁদে
বাতাসের ঝুমঝুমি!
কেন কাঁদে বাতাস
শীত হয় ঘন আরও
কেন রৌদ্র ঝিমায়
মুখ হয় রক্তিম গাঢ়!
তুমি জানো সবই
চেনাে নদীটার মুখ
গাছের পাতার ধ্বনি
মুখস্ত আমার বুক!