চুল্লি ও চুমা
পৃথিবী মানে পৃথিবী, চুল্লি ও চুমার এক মস্ত বড় লেখিকা
সেই লেখা মাথার ভেতর, সেই লেখা ঘিলুর ভেতর
তবুও তোমার পদ্মযোনি উন্মুক্ত হোলো না
কাঠবিড়ালির মতো আমরা কেবল বিমূঢ় ও বিভ্রান্ত গর্ত করলাম
লাল গর্ত, চূর্ণিজলে মহাজগতের শিশ্ন কেঁপে ওঠে
তুমি তবুও আমাদের বিস্ময় নিলে না , বিপন্নতা নিলে না
হাড়মাংস রাস্তায় ছড়িয়ে কতদিন বসে থাকবো আমরা?
মশারির ভেতর লুপ্তপ্রায় প্রাণীরা তামাক ও আফিম নিয়ে ঘোরে
পৃথিবী মানে পৃথিবী, কুয়োর ভেতর নীল জল, কাঁকড়া ভেসে যায়
সারারাত তুমি কামড়ালে, চুল্লি ও চুমার ভেতর তুমি কামড়ালে
তবুও তোমার পদ্মযোনি উন্মুক্ত হোলো না
লেখাগুলি পড়ে রইলো রাস্তায় রাস্তায়, মৃত্যুপ্রবণ…
শ্যামাসংগীত
বিস্ময়চিহ্নের মতো পড়ে আছে মড়ার খুলি
তুমি ওর ভেতরে ঘর বসাবে? সংসার পাতবে?
এইখানে বিপজ্জনক বিস্ফোরণ, বজ্রপাত, ভাঁজ করা জিভের ওপর
সান্ধ্যকালীন ছাইরঙ, যেন ফুসফুসে ফেরিওলা, বিক্রি হচ্ছে প্রাণস্পন্দন,
চারদিকে পতঙ্গের যৌন ফাজলামি, আলমারি খুললেই কচ্ছপ, আর
দড়িবাঁধা মোরগের ডায়েরি ফাঁক হয়ে গেলো, লিঙ্গ ফেলে কয়েদিরাও
খসে খসে পড়ে, শত শত শতাব্দীর জান্তব কামড় মাথা তুলেছে আর
তুমি, এই রশ্মিগ্রহের ভেতর, গোখরোর শ্যামাসংগীত সারাক্ষণ বুনে যাচ্ছ
বিস্ময়চিহ্নের মতো পড়ে আছে মড়ার খুলি
গোখরোর শ্যামাসংগীত শুনতে শুনতে আমাদের আর ঘুম আসে না…
জনপদ
এই বিশাল পৃথিবী, এর প্রতিটি আরক্তিম গর্ভগৃহ, আর উড়ন্ত ঈগল
তুমি কি তার জিন নিয়েছো? হিংসা নিয়েছো? আমরা পাগল,
ছেঁড়া চপ্পল দিয়ে স্বপ্নভর্তি ডিমগুলো ফাটাই; ফাটাতে ফাটাতে
গভীর প্রলয়ের ভেতর, নির্জন তরঙ্গের ভেতর, তোমার কবিজন্ম ধরি,
তবুও, তবুও, তোমার পাঁজর চাবি দিয়ে খুলতে পারি না
তুমি জিরাফের হৃদপিণ্ড চোখের সামনে টানিয়ে রেখেছো কেন?
ভূমিকম্পের সময় তোমার গণ্ডার একশৃঙ্গ উর্ধ্বে তুলে ক্রমাগত
ভৌগলিক চিৎকার করে, আর তুমি, জাহাজের লম্বা বারান্দায়
সবুজ সিন্দুক নিয়ে বসে আছো; চারিপাশে জনপদ বমি করলো
তুমি শুধু লাভা ও আগ্নেয়গিরির চলৎ প্রক্রিয়ায় রেখে গেলে তোমার জীবন…