জন্মান্ধ মেঘের জানালা
পৃথিবীটা পার হয়ে মঙ্গলে যাই―
ঘর যেন আলোর আরশি অসংখ্য দরজা;
ভাবতে ভাবতে পার হই কয়েক শ বাড়ি
সব পাই―
কোথাও দেখি না কোনো খিড়কি-জানালা
নীল পারুলের বাগান পেরুলে একটি দোতলা
মানুষ দেখি না
দরজাও নেই―
আধখোলা শুধু এক প্রাচীন জানালা।
কাউকে দেখি না তবু সারাদিন উঁকি দিয়ে যাই
কিছুই দেখি না তবু প্রত্যহ তাকাই;
পাঁচটি বছর শেষে গোধূলির মালা হাতে আসে এক হাওয়ার মেয়ে
―হাতে তার তুলে দেই জলের আয়না আর মাটির সানাই।
কাঁদতে কাঁদতে ফিরে যায় সে অন্দরমহলে
তারস্বরে বলে ওঠে―
তোমাকে চিনেছি আমি, তুমি আদমের ছেলে―
হাবিল ও কাবিলের ভাই;
কোথায় এসেছ জানো?
―মঙ্গলে প্রণয় নেই, এটি এক জন্মান্ধ মেঘের জানালা।
পৃথিবীর শিস
পদব্রজে পার হই―
সোনার শেকল আর খ্যাতির মিনার;
কাচের ব্যাকুল নদী পার হয়ে এলে মনে পড়ে পোড়াভিটে―পৃথিবীর শিস;
এক মুঠো মাটি আঙুলে পরখ করে নিজেরে তাকাই―কখন তা ভিজে যায়
নিজেই জানি না…
সোঁদা মাটি চোখের শিশিরে রোজ ফুল হয়ে ফোটে―তুমি তা খোঁপায় পরে
পানশালে যাও! ভোরের সোনালু ফুল আনমনে ঝরে যায়―হেসেকেঁদে
দিন শেষে সন্ধ্যাতারাদের সাথে মেঘ হয়ে যায়…
এক আঁজলা মাটি উড়ে যায় মেঘনীল রোদে―উড়েপুড়ে গড়ে তোলে
মায়ার শহর; আকাশ মেঘের চেনা যতটুকু ঝরে রোজ বাদলের ধারা…
এক মুঠো মাটি
. ফুল হয়ে ফুটে
. মেঘ হয়ে ভিজে
. উড়েউড়ে ফিরে আসে ভোরের দোয়েল…
কবি
নিমগ্ন বিস্ময়ঘোরে
রাত জাগে, ঘুম ভাঙে―
. একা কাতরায়,
আঁধারে বসতি গড়ে―
. ব্যাকুল বিভ্রমে ফিরে জোছনা বিলায়।
কোলাহলে রোজ একা হয়ে যায়…
ভোরের ডানায় উড়ে মেঘকে হারায়
নয়নে যমুনা পুষে নীলিমাকে চায়,
আঁধারে সাঁতরে নদী―
. ভেজা অভিমানে মুখ লুকায়, অবলীলায়।
প্রণয়ে খেয়ালি শিশু কদাচিৎ প্রার্থনায়,
অকারণে বিঁধে যায় বিষাদের তীরে যাতনায়,
সহজ দরজা ভুলে
. রাত জেগে হাই তোলে নীল জানালায়।