ফুলবৃত্তান্ত
বাতাসে ভেসে আসা ফুলের রেণু
ফুটে আছে রোকেয়া হলের
বারান্দায়; এ কোন কামাচ্ছন্নতায়
সৌর ঝড়ে আক্রান্ত সূর্যমুখী—
ঊর্ধ্বপানে মেলেছে তার ডানা
রক্তস্নান শেষে আবারো জন্ম দেবে
সুকঠিন সহস্র মৃত্যুর;
অথচ, ঘোড়ার জিন টেনে ধরে
তুমি হে আর্য যুবক
খুঁজে যাও বাতাসের আঁশে বোনা
ফুলের রেণু, আদিম মোহিনী ঝঙ্কার
ঝরে যাচ্ছে রেণু সহযোগে
কান্না ও প্রেম
উঁকি দিয়ে দেখি কেউ নেই
প্রতিধ্বনি কাঁপাচ্ছে পাতা চোখের।
সরে যায় স্মৃতি গাঢ়
কারো না থাকা
লীন হয়ে মেশে জলে।
অজস্র শূন্যতা ভাসে জলের ওপর।
ঘরোয়া চিৎকারে ডাকে এক মায়া
ঘরোয়া চিৎকার শুয়ে যাচ্ছে
বিছানায়, অঙ্কশায়িনী নগ্ন কর্পূর শুয়ে আছে
ঠোঁটে তার ওড়াও বাজীকর শাহবাজ;
মন্থনে ঘটে কত অচেনা সাক্ষাত, দূরে—
ওড়ে দেখো, দুরন্ত শাহবাজ এক
আয়ুর পাশে পড়ে থাকা
অচিনের স্তনবিস্তারে।
আলো-খেলা
আলো জমে আছে পাতায়
কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে
দিগন্ত উদ্ভাস; এ কোন আলো-খেলা
গাঢ় শরীরে তোমার পাতা!
শিরা-উপশিরায় তন্দ্রা ও তার
মধ্যবর্তী কলমিলতা হেলে যায়।
পাহাড় থেকে সরে
চাঁদ পড়ে আছে জলে;
জলজ মাকড়েরা থামে,
পথ খুঁজে নেয় দ্বিখণ্ডিত চাঁদ
আর আধো কলমিজঙ্গলে—
কালো পাতার নিচে বিস্ময়টুকু ধরা।
এ কোন আলো-খেলা
গাঢ় শরীরে তোমার পাতা!
উপশমের উদগম
অতীতের প্রতি মুখোমুখি মাঠে শস্য হেলেছে
বাতাস বেঁকে যাওয়া ফলবান শীষ
দূর নভতলে পাঠায় সংকেত,
এই অপার্থিব চাঁদ, রোপ্য নদী আমাদের ছিল
ছিল যমুনা ও তার অধিক জলবতি ফলের বাগান।
বপন করেছি ক্ষতে জল আর সসাগরা দ্বীপপুঞ্জ;
মানুষের ঘুম নিয়ত উপশমের প্রশান্তি—
সন্ধ্যার প্রস্ফুটন আমারি নির্ণেয় আকাশ
পাহাড়ের স্মৃতি, যৌগ রক্তের কলা;
এ মুকুর রাত্রির শেষভাগে উদিত করবে
ক্ষণ উন্মাদনার নক্ষত্র
কাঠুরের দুঃখ
মাটির শাঁস ছড়িয়ে উড়ন্ত উদগমে
বৃক্ষের আকার ছায়াদের জাগৃতি
তাদের হৃদয় মন্থনে ফোটে ফুল;
রক্ত মৃণালে ভেসে
চাঁদ এক ফেটে পড়ে
স্বচ্ছ সরোবর, আধো জাগ্রত শ্যাওলায়,
ধ্বনিত হয় বার্তাবহ ছায়া তোমার;
কাঠুরে ভুলেছে শোক বৃক্ষ কর্তনের
গোলার্ধের নিঝুম জঙ্গলে মস্তক তুলে ধরে
সমুদ্র অভিমুখে বেরিয়েছে সে
ফেলে গেছে যেন তার ইতিহাস;
ভুলেছে দীর্ঘ বৃক্ষের নিচে জ্বলে
থাকা রূপালি কুঠার।