শব্দঋণ
আমাকে পান করো আমৃত্যু কোলাহলে।
গূঢ় গাণিতিকতায়—ছন্দ ফেলে,
নামতার পারদে নামাও ওঠাও জ্বর।
নির্মোক জড়িয়ে গতকাল
পার হয়ে এসে,মহাকাশে স্থির হতে চায়
আগামীর ভয় নেই বলে—
ভয় নেই অন্ধকার শূন্যতায়।
আলোর তাড়নে শব্দকাতর ওরা
সাপের জীবন পড়ে, গুনগুন স্বরে
পিতা আসেন তার ভেতর। হাত বুলিয়ে
নিয়ে যান, খণ্ডিত কোনো ঘোরে—
জলের রঙে তরল অঙ্কপাত
আর পারি না, সমাধানে শত ভেদ।
তারচেয়ে এই ভালো—
বকের শাদায় ঘুমিয়ে পড়ি, চলো…
শব্দের ঋণে কাতর ঘোড়াগুলি
দলে দলে এগিয়ে আসছে দেখো—
দুলছে পায়ের পেশী, পৃথিবীর চাঁদ
বেণী করা মেঘে উঁকি দেয়, শোঁকো…
ঘ্রাণ পাচ্ছো? ডানার ভাঁজে লবণিমা
এঁকে এঁকে লক্ষ জোনাক মরে গ্যাছে
আলো জ্বেলে। ঘোড়াদের ক্ষুরে নতুন
জলের গান, দেউলিয়া হলে মুছে দেবো
চকের দোকান ঘর—ব্ল্যাকবোর্ডে শুধু
নামতার কড়া নেড়ে উড়ে উড়ে যাবে
জোনাক পোকার মাত্রাবিহীন স্বর।
উপগত মহিষের ঘ্রাণ
চেরির শরীরে পাপ, কামজলিপিকর মরে গেছে।
মানে, জিহ্বায় সাপের আলিঙ্গন
মানে, মেঘজাত নেমে আসো, চুমু খাও উপেক্ষিত যে—
ককপিটে প্রলাপের ভিড়,
মিউকাস মেঘে প্রেম প্রত্যাখ্যাত চিঠি।
মানে, মহিষের পিঠে চড়ে সরষে ক্ষেতের বিকেল,
ম্রিয়মাণ চাঁদের বিলীনতা।
দৃশ্যের ভেতর মৃত মাকে জড়িয়ে
কত রাত কেঁদেছে, অন্ধকার আকাশের নিচে;
কে জেনেছিল ডায়েরির শেষতম পাতাও
শীতল পৃথিবীতে উপগত মহিষের ঘ্রাণ মনে রাখে—
মানে, সুমেরীয় অবতলে দীর্ঘ বয়সী ছায়া আসে,
বরফিকাটায়।
প্রকাণ্ডতায় ভর করে আসে গাঢ় চৈত্রমাস, ঘামগ্রন্থিহীন।
জিরাফের ঘুম
ঘুম, যাকে বলে দ্বিতীয় মৃত্যুর অবসাদ—
অথবা, বিচ্ছিন্ন পরমাণুবাদ
অনিত্যতা ডুবছে-ভাসছে।
আচ্ছন্ন স্বপ্নে জিরাফের চোখাল মৃত্যু
নিঃশেষ করে দিতে দিতে অথবা,
জাগিয়ে তুলে নিকোটিনিক সকাল
এভাবে চক্রাকারে-নিরাকার ঘুমে সারা
তোমায়, শস্যদানার স্নানে দেখেছিল যারা—
তাদের অন্তিমশয্যায় দৃষ্টিরেখা স্থাণু;
পরাহত শৌর্যের কাল ফুরিয়ে এসেছে
বেদনায়।
আজ ঘুমের দিবস।
আচ্ছন্নে মরেছি, অপবাদে ঘুম
তারচেয়ে নিরাপদ এখানে গুম—
জমে আছে স্থির জিরাপের চাউনিতে
প্রেমের বচন তুলোর বাক্সে পোরা
ঝরে ঝরে পড়ে কৌণিক বর্ষাগমে।