মাছের জীবন
বৃক্ষ বুঝেছে তার নাম, বুঝেছে নিজের ভেষজ ইতিহাস কী করে বৈরি হলো।
নর্দমার মধ্যে একটি সোনালি মাছ মনের সুখে বাস করে। আমি প্রতিদিন বাজারে যাই; প্লেন-হেলিকপ্টার এইসব কিনি। চকলেট খাই। রূপসী মাছটি রূপালি স্বপ্ন দেখে, দেখতে দেখতে খাদ্যাভ্যাস পাল্টাই। এরপর দু’জনে মিলে পৃথিবীতে পায়েচারি করি। দূর থেকে হারুন বিএসসি তার কন্যাদের জলের সংকেত লিখতে দেখেন; তাদের সবুজ ফ্রকের সেলাই ভিজে যায়।
ওহে বোকা মাছ, এটা সোনালি ডোবার শহর। এখানে বোকা পুরুষের সাথে সংসার কিম্বা বাজার গমন কোনটাই ঠিক নয়। এখানে ঘোলা পানি ঘোলা জল মিশে একাকার নয়। দশটি ঢোড়া সাপের দৈর্ঘ্যের মতো বিপদসংকুল এই হ্রদ। এর পানিতে নানা জীবাণু আছে, জীবাণুর ভেতর ফিল্টার আছে। ফিল্টারের ভেতর পাস্তুরিত দুধ থাকে।
মাছের জীবন আর সস্তা নয়। একভাগ পুঁটি মাছের দাম পাঁচ টাকা নয়। বাজারের ব্যাগ হাতে ঘুর ঘুর করি। মনের সুখে রাস্তা মাপি। রাস্তা থেকে কন্যাদের সবুজ ঘ্রাণ পাওয়া যায়। যানবাহনের ভিড় ঠেলে মৎস্য ভবনের দিকে কে যেন চলে যাচ্ছে
বাসর
ভাঙা ব্রিজের নিচে আমাদের বাসর। চৈত্রশাপের দিকে চেয়ে চেয়ে চাঁদ ডুবে যায়, অতঃপর: অমাবস্যার ভেতর থেকে মন্মথ ডাক দেয়। আমরা এগারসিন্ধুতে বসে মহাসিন্ধু পার হতে চাই। ইঁট-সুড়কির ব্রিজে খেলা করে শিশুরা। তাদের চোখের স্রোতে যৌথ সাঁতার। তালপাতার নথির মধ্যে পতঙ্গ-উল্লাস ধরা পড়ে। তুমি, মোহিনী, ব্যকুল কেঁদে চলছো; তোমার করুণ ছলনা জালে ধরা পড়েছে মন্দাক্রান্তার ক্লান্তি। এই বিলাপের ধ্বনি লিখে রাখছেন আমার পূর্বপুরুষগণ।
লোহার রেলে বসে, দুলতে দুলতে, বাতাসের সংঘর্ষের দিকে চলে যাই অনেক দূর আমি আর মন্মথ; চা পানের বিরতি এসে পড়ে, কত কি বাকি
আমি ও নিঃসঙ্গ ভেড়া
যে নিঃসঙ্গ ভেড়ায় চড়ে স্পিনিং মিলে বেড়াতে গিয়েছিলাম
তার কোনো পশম ছিল না। তার কোনো ইতিহাসও ছিল না।
সেই ভেড়ার খুরে মাতাল জিজ্ঞাসা ছিল, ছিল বুনো গন্ধ
কিন্তু মিলে প্রবেশের পথে বিশাল পাপোশে সেই গন্ধ—
খুর মুছে গেল। ফলে সে ভুলে গেল তৃণভোজ রীতি।
সুতরাং মেশিনের রাজ্যে সে আর আমি পরস্পরের
আমিষের উৎস হয়ে ক্ষুধার অপেক্ষা করতে লাগলাম।