আবার চর্যাপদ-১
শরীর এক অচিন গাছ, রক্তমাংসের ভেতর
ছড়িয়ে দিয়েছে পাঁচখানি ডাল
তার ভেতর আছে মহাকাল
চিরায়ত দুঃখে ও সুখে
জেগে থাকে শুধু চঞ্চল মন
লুইপা জেনে গেছে বসে ধ্যানে
জীবনের অধিক মৃত্যুই কাছে টানে!
আবার চর্যাপদ-৩
শুঁড়ি মেয়ে নিজেকে ঘিরে
চোলাই করে মদ ধীরে ধীরে
দেহতে আছে চৌষট্টি কলা
খদ্দের তাতে মদির হয়ে
দশমীর চাঁদটাকে চিহৃ ভেবে
পসরা সাজায় চৌষট্টি ঘড়াতে
মানুষ অমরত্বের লোভে
নেশায় ডুবে পথ খুঁজে
ছোট্ট ঘটি, ছোট্ট নালায়
বিরুপা তাই বসেই ভাবে
সুখ, সে নারী নাকি নেশায় থাকে!
আবার চর্যাপদ-৫
মানুষ আশ্চর্য এক মোহতরু
ভবনদীর স্রোতে ছুটে চলে
দুকুলে মোহপঙ্কের দুর্নিবার ফাঁদ
মাঝখানে জেগে থাকে ঢেউয়ের
. তুফান
দেহতেই আছে পারাপারের
সমাধান
বোধিজ্ঞানের করাতে
কেটে নিলে মোহতরু
পাটগুলো জ্ঞানালোকে জোড়া দিয়ে
চাটিলপা’র সেঁতু তৈরি হবে নদীপারে
প্রকৃত মানবতরু চলে না বামে ডানে
হাজার বছর ধরে মধ্য পথে হেঁটে চলে
আবার চর্যাপদ-৬
হরিণচঞ্চল চিত্ত নিয়ে মানুষ বন্দি
কামনায় উদগ্র শরীরে
যেন তাই অপণা মাংসে হরিণা বৈরী!
কাল এক আশ্চর্য শিকারি
বিনাশের মন্ত্রে দেহ ঘিরে রাখে
কামনার অধিক দেহে থাকে সৌন্দর্য
ভোগীর কাছে হরিণের মাংস কী নারীর লাবণ্য
আজও রয়ে গেছে প্রাচীন কালের মতো
ভুসুকু জানে মানুষের ইন্দ্রিয়
নৈরাত্মার সন্ধান পেলে
পৌঁছে যাবে মহাসুখকমলবনে
অথচ সংসার এক মায়ার বাঁধন
শরীর ঘেটে জনন চলে
হাজার বছর সাধনার প্রদীপেও
আমি খুঁজে পাইনি নিষ্কাম আলো!
আবার চর্যাপদ
চন্দ্র ও সূর্যের মায়ায় পথরুদ্র হয়ে
মহা বিরক্ত হয়ে ওঠেন কবি কানু;
আমি ভাবি এমন লোভে ভরা সংসারে
সে কেন উদাস হয়ে থাকে অপার মহিমায়
কায়-বাক-চিত্ত তিন জন তারা অভিন্ন সংসারে;
হঠাৎ রিপুর গ্রাসে শরীর কেন বিচ্ছিন্ন হয়ে ওঠে!
শরীর নিয়ে যারাই এসেছে ফিরে গেছে তারা
কেউ নেই অবশিষ্ট আর আমাদের সংসারে
কাল পেরিয়ে এখনো মহাসুখপুর যেতে চায় যারা
আমি জানি কানুই দিতে পারে তার প্রকৃত ইশারা