বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হতো ‘আলাওল সাহিত্য’ পুরস্কারকে। সম্প্রতি গত কয়েক বছর যাবৎ ‘বগুড়া লেখক চক্র’ পুরস্কার সেই স্থান অধিকার করে নিয়েছে। মনে রাখা ভালো, রাজধানী থেকে প্রায় হাফডজন করপোরেট পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে, যার অর্থমূল্য আকাশচুম্বী। কিন্তু অর্থমূল্যটুকু বাদ দিলে ওইসব পুরস্কারের সাহিত্যমূল্য প্রায় শূন্যের কোটায় বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। যাক সেই আলাপ। সেই আলাপে আবার অনেকেই গোস্সা করতে পারেন। বিশেষত যারা এই সব করপোরেট পুরস্কার পেয়েছেন, তারা নিজেদের নোবেল লরিয়েট দাবি করতেও পারেন।
তাই, এই আলাপ বাদ দিয়ে আসি মূল প্রসঙ্গে। বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কারের পরপরই যে সংগঠনের পুরস্কারকে লেখক সমাজ আন্তরিক ভালোবাসায় গ্রহণ করেছে, সেটি চাঁদপুরের চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি। আর এই সংগঠন থেকে দেওয়া দুটি পুরস্কারও বেশি সাড়া ফেলেছে। এর একটি চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার, অন্যটি ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক’।
চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যতিক্রম কিছু কাজের মাধ্যমে বারবার শিরোনামে এসেছে এ প্রতিষ্ঠান। মধ্যযুগের অমর পুঁথিসাহিত্যিক কবি দোনাগাজীর সম্মানে ২০১৯ সালে এ সংগঠন প্রবর্তন করে ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক’।
কিশ্বস্ত-সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর পদক ঘোষণার সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যে ঘোষণা হবে ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক’। গেলো বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে পদক ঘোষণা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এবার একসঙ্গে দুই বছরের পদকঘোষণা করা হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কারা পাচ্ছেন ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক: ২০২০-২১?’
২০১৯ সালের এই পদক পেয়েছেন ৮ জন। তারা হলেন কথাসাহিত্যে মনি হায়দার, কবিতায় অনু ইসলাম, গবেষণা সাহিত্যে এ এসএম ইউনুছ, সার্বিক সাহিত্যে মোস্তফা হায়দার, লিটলম্যাগ সম্পাদনায় সুমন কুমার দত্ত, সংগীতে মোহাম্মদ ইউসুফ ও বাচিকশিল্পে জেরিন সিঁথি।
ইতোমধ্যে বেশ কিছু নাম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। কবিতায় ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক-২০২১’ পেতে পারেন হেনরী স্বপন, জাকির জাফরানের মধ্যে যেকোনো একজন ।তবে, এই দুজনের সঙ্গে আরও সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে আরও অন্তত তিন জনের নাম নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। আর কথাসাহিত্যে নাহিদা নাহিদ, নিলুফা আক্তার, সাইফ বরকতুল্লাহ ও আনিফ রুবেদ আলোচনায় এগিয়ে আছেন।
প্রবন্ধে এগিয়ে রয়েছেন সৌম্য সালেক, জোবায়ের মিলন ও ফারুক সুমন। অনুবাদে রায়হান রাইন, মামুন রশীদ ও অরণ্য আপন। ফিচার ও ভ্রমণসাহিত্যে নাদিম মজিদ, আবু আফজাল সালেহ ও জোবায়েদা লাবণীর নাম শোনা যাচ্ছে।
এদিকে, কবিতায় ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক-২০২০’-এর জন্য প্রত্যয় হামিদ ও সায়্যিদ মঞ্জুর শোনা যাচ্ছে। প্রবন্ধে সরকার মাসুদ, আজিজ কাজল, নাসির হেলালকে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। নাটকে জাহাঙ্গীর হোসেন ঢালী, প্রণব কুমার রায় ও অরুণ সরকার এবং ফিচার ও ভ্রমণ সাহিত্যে রিফাত কান্তি সেন, ডানামির্জা ও ইয়াহিয়া মান্নানের নাম ঘুরেফিরে উচ্চারিত হচ্ছে। বাচিক শিল্পে পেতে পারেন কাজী মাহতাব সুমন, নূর-ই আলম ও কাব্য কাব্য কণিকার মধ্যে যেকোনো একজন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের এই পদক পেয়েছেন ৮ জন। তারা হলেন কথাসাহিত্যে মনি হায়দার, কবিতায় অনু ইসলাম, গবেষণা সাহিত্যে এ এসএম ইউনুছ, সার্বিক সাহিত্যে মোস্তফা হায়দার, লিটলম্যাগ সম্পাদনায় সুমন কুমার দত্ত, সংগীতে মোহাম্মদ ইউসুফ ও বাচিকশিল্পে জেরিন সিঁথি।