শাদা মাফলার
কুয়াশার প্ররোচনায় ঢুকে পড়ি এ রাস্তা
থেকে ও রাস্তায়
মাথায় মাংকি ক্যাপ, তোর লাল ব্লেজার
শীত বলে কি সামান্য রঙ-পরবশ?
একদিন দুহাত দুপাশে মেলে হাঁপাতে হাঁপাতে
কেউ যদি পাখি হতে পারতাম
জড়িয়ে ধরা যেতো, যেতো কিন্তু
মাধ্যাকর্ষণ নয়, পতনের শব্দে চিনেছি ব্যথা
তাই নিশ্চিন্তে নীরব বাগানে
. চুপিসারে খুঁজি শাদা মাফলার।
নখের যাত্রা
দুঃসময়ের সমাচার লিখে লিখে বড় ক্লান্ত
. এই নখের যাত্রা
ছাদের নিচের মাথাটাও এত কাঙাল
. তখন একটা মা ছিল
মাঠ শেষ হলে ডাকতো, নিরোজা নিরোজা
এখন ক্রমশ হ্রস্ব মাঠ
এখন পড়ন্ত মায়া
দেরি করে বাড়ি ফিরি
এবং এখন ঘর-দোর আর কড়িকাঠের প্রাণ পর্যন্ত জানে,
. টিকটিকি ছাড়া
দেয়ালের আর কিছুতে আমার কোনো আকর্ষণ নেই।
তিলোত্তমা
স্বীকার করি, সংগীত শিখিনি! রোদন জমা করিনি!
বোতাম ছিঁড়ে গেলে দারুচিনি গাছের কাছে শিখতে চেয়েছি নেশা!
গাছেরও আছে ভুরু ভঙ্গি!
বিবাহের রাতে আয়নায় এক তিলোত্তমাকে দেখি
পেশোয়াজ পরতে গিয়ে ভেঙে ফেলেছে বাঁকা নখ!
তখন সমুদ্রে যাওয়ার ইচ্ছে হলো আর যেহেতু জানলো না কেউ
কিভাবে এক পাথুরে অচেনা স্টেশনে হারিয়ে গেলাম আমি!
অসংসারী
আমাকে বারান্দায় শুতে দাও
বারান্দার পরেই তুমি আমাকে আকাশের ঠিকানা দাও
অচল মানুষ মেঘ চিল আর কাটা ঘুড়ির ভেসে যাওয়া দেখে
. থালা-বাটি, চায়ের ঘ্রাণ, মেয়েটির স্নান
. কারও চুল, রান্না অথবা অভিমান
ছাদের শীতার্ত আপেল আবর্জনার মতো নিঃশ্বাস
উলুধ্বনির মতো কেউ ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার করছে পুনর্জন্ম
. আমি মশারি থেকে
বেরিয়ে এসেছি, আমার সংসার আসে না!
পঙ্ক্তি কবিতা
আগুন হাতে ফিরে এসেছি হে অভয়
আমার স্বপ্নাত্মা কি অন্ধ
আমি কাঁদছি না তবু আমার পেছনে ধাওয়া করে আসছে বিনাশ!
আজানুলম্বিত শোক আয় ঠোঁট মেশাই
বহু দানবীয় চুম্বন দেখেছি
এখন আমি পার্কচেষ্টারের এসাইলামে
ঠাণ্ডা, জমাট, ধোঁয়া
আয় শোকের জুতো, কালো রঙ!
ধলেশ্বরীর ঝাঁপ খেলা পূর্বদেশীয় মাছ আমি
পেরিয়ে এসেছি বহু বর্ষার গান
ডোমেনিকানের বড়শির টোপ কামড়ে ছিঁড়ে
এখন আমি খোলা, কুমারী, নগ্ন সমুদ্রে!
ঘৃ্ণা থেকে মুগ্ধতা শিখি, তুমিও শেখো
ঘৃণা লেখো সমুদ্র প্রমাণ
ঘৃণার ঘ্রাণ দেখো মুগ্ধতার সমান!
অর্ধেক ভালোবেসেছি বলে তোমাকে পাওয়া হলো না
অর্ধেক ভালোবাসিনি বলে তোমাকে পাওয়া হলো না!