বনের ভেতরে
অনেক গোপনে একা ভুলো মনে এখানে এসেছি
অথবা এখানে কেউ নেই বলে ভাবি—
কেবল গাছেরা লাল বুকের রবিন
কিংবা বাজখাই পাখিদের জড়িয়ে রেখেছে।
চারপাশে বনের প্রহার; যেন সারাদিন সন্ধ্যা
মাঝে মাঝে পাখি ডাকে, পাতা নড়ে
আমি একা।
ওপরে তাকালে দেখি অগণন মেঘ বয়ে যায়
দারুণ নিঃশব্দে।
কিন্তু কিছুকাল গলে গেলে
ক্রমশ প্রকাশ্য হয় আগেকার যাতায়াত—
বরুণ বিকেল চারদিকে দেখা যায়
ঝরা পাতার ভেতরে
গন্ধ গোকুলেরা দলে দলে চোখ ম্যালে আর
মৃদু মৃদু গোলমাল করে—
ঝিরঝির বাতাসেরা বয়ে গেলে
মাটির সুবাস উড়ে আসে—
যা কিছুই ঘটে ভেতরে বাহিরে
যেন থির রোদে সবকিছু চোখে আসে।
উত্তরের দিকে
কুকুরেরা পরী দেখে কাঁপে না অথবা
তাদের পরীরা আমাদের মতো ফর্সা
কিংবা এত মৃদু নয়। কিছু সাদা মাছ—
কখনো ঘুমন্ত গায়ে বাতাসের দিকে
বয়ে গিয়ে ভাবে হাওয়াগুলো ধারালো
পালকহীন হাঁটছে উত্তরের দিকে—
এক ঝলক হওয়া তাদের ঘুরিয়ে
হাতের ভেতর শুধু হিসাব করায়।
কাকে বলে পরিযায়ী? কুকুরেরা জানে,
হয়তো তুমিও বোঝো। পাথর বাঁধানো ঘাটে
সকাল যেভাবে ফোটে, স্রোত আসে যায়
গাঢ় বাদামি রাত্রিতে আলো ছলকায়—
গোল চোখেরা সেভাবে ঘন বয়ে যায়,
নিজস্ব নজরে ভেবে, যেন ভিন্ন হয়।
আগুনে
কখনো শীতে তুমি কিংবা আগুন
চুপচাপ দুপুর আনো পাখিডাকা—
কখনো শীতে তুমি কিংবা আগুন
সহজে গুনে গুনে রাখো রাতগুলো,
বাইরে হিম—তুষার ছেয়ে গেলে
মনে হয় শিউলি যেন ঝরে গেছে—
কখনো শীতে তোমার হাত ধরে
আগুনের নিকটে গেলে মনে হয়
ফাটছে যেন আমারই শরীর
বিবশ কাঠের সঙ্গে কুসুমিত—
যেন তুমিই মিহি কোনো আগুন
ঘন গভীরে প্রেম আনো সবখানে।