পলাশীর আমবাগানে ইংরেজের হাতে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য ডুবে যায় ১৭৫৭ সালে। এরপর নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় বাঙালির জীবন থেকে পেরিয়ে যায় প্রায় একশ বছর। ফেলে আসা এই একশ বছর ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অত্যাচার, নির্যাতন, শোষণ আর নানা রকম পীড়নের মধ্য দিয়ে বাঙালির জীবন এগিয়ে চলে আরও একটি শতকের দিকে। বিদেশি শাসনের ভেতর থেকেই নিজেদের মুক্তির জন্য গড়ে উঠতে থাকে আন্দোলন, খোঁজ চলতে থাকে মুক্তির বিভিন্ন পথের। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠতে থাকে মানুষের মধ্যে। সামাজিক, অর্থনৈতিক নিপীড়নের মধ্যেও মানুষ স্বপ্ন দেখতে থাকে। নিজেদের অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জেগে ওঠার সাহস অর্জন করতে থাকে। সমাজ পরিবর্তনের পথ দেখাতে গিয়ে সহায়তার চেয়ে বাধার ক্ষেত্র বাড়ে—তবু কোথাও কোথাও দেখা মেলে সফলতার।
মানবতাবাদী আদর্শের হাত ধরে বাঙালি সমাজে পরিবর্তন দেখা দিতে থাকে। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ভূদেব চৌধুরী, রাজনারায়ণ রায়, ডিরোজিও যে পথ দেখান তাদের সেই পথরেখা ধরে পরিবর্তনের পথরেখা আমাদের সমাজে আলোর ছাপ ফেলে। ফলে ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের ধারার রেনেসাঁ না হলেও বাংলার সমাজে, সংস্কৃতিতেও একটি পরিবর্তন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। স্বাধীনতা-সূর্য অস্ত যাওয়ার ৬৬ বছর পর জন্মগ্রহণ করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সময়টা ১৮২৪ সাল। তখন বাঙালির জাতীয় জীবনের চলছে একটি সন্ধিক্ষণ। প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের দ্বন্দ্ব বাঙালির জীবনে বইয়ে দিয়েছে ঝড়ো হাওয়া। রাজা রামমোহন রায়ের সমাজ সংস্কার আন্দোলন, ডিরোজিও ও তার শিষ্যদের সমাজ ভাঙার আন্দোলন, সংস্কারপন্থী হিন্দুদের পুরনো কুসংস্কার আর সনাতনী ধারা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টার ভেতরেই বাংলার রেনেসাঁ দেখা দেয়। ত্রিমুখী টানাপড়েনের ভেতর দিয়ে গড়ে উঠতে থাকে বাংলা সাহিত্য। উনিশ শতকেই বাংলা সাহিত্যের স্বাতন্ত্র্য নিয়ে চিহ্নিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় সচেষ্ট হয়। ঠিক এই সময়ই মাইকেল মধুসূদন দত্ত আবিষ্কার করেন বাংলা কবিতার ভেতরের শক্তিকে।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত হিন্দু কলেজের ছাত্র ছিলেন; চেয়েছিলেন সাহিত্যসাধনায় নিজেকে অমর করে রাখবেন। চেয়েছিলেন খ্যাতি; নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্মান্তরিতও হয়েছিলেন। খ্যাতির প্রয়োজনেই ইংরেজিকেই তার সাহিত্য চর্চার একমাত্র মাধ্যম ভেবেছিলেন। শুরুও করেছিলেন সেই পরিকল্পনানুসারেত। কিন্তু ইংরেজিতে রচিত সাহিত্যকর্ম তাকে কোনো খ্যাতি এনে দেয়নি। পারেনি মনের শান্তি দিতে। যে কারণে তিনি নিজেকে পরিবর্তন করেছিলেন—সেই পরিবর্তনই তাকে করে তুলেছে বাংলা সাহিত্যে অমর কবিপুরুষ। ১৮৪৯ সালে তিনি ইংরেজিতে রচনা করেন— Captive Lady ও Vision of the Past । বই দুটি মাইকেল মধুসূদনের জন্য কোনো কৃতিত্ব বয়ে আনতে পারেনি। তিনি মাদ্রাজে বসে বই দুটি লিখেছিলেন। তখন মাদ্রাজের সংবাদপত্রে বই দুটি সম্পর্কে লেখা হলেও তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। আর তখনকার বাংলা সংবাদপত্রগুলোও এ বইগুলো সম্পর্কে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা করেনি। সেইসঙ্গে বাঙালিরাও মাইকেল মধুসূদন দত্ত সম্পর্কে কোনো আগ্রহ দেখায়নি।
বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী ভাগ্যবিড়ম্বিত এই কবি একসময় কলকাতায় ফিরে আসেন। তিনি মাতৃভাষার সেবা করার কথা ভাবেন এবার। সেইভাবনা থেকেই রচনা করেন ‘তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য’। এরপর একে একে তিনি বিভিন্ন কাব্য ও নাটক রচনা করেন। তিনি যেমন বাংলা ভাষায় প্রথম সনেট রচয়িতা, অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রণেতা, প্রথম ও সার্থক মহাকাব্য ‘মেঘনাদবধ কাব্য’র রচয়িতা মহাকবি, তেমনি সার্থক ট্রাজেডিও তারই হাত ধরে প্রথম বাংলা সাহিত্যে দেখা দেয়।
বাংলা ভাষায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এই ছন্দের হাত ধরে বাংলা নাটকের যথার্থ মুক্তি ঘটে। পরে তিনি এই ছন্দেই রচনা করেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ নামের মহাকাব্য। মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত এই মহাকাব্য বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মহাকাব্য; এখন পর্যন্ত একমাত্র সার্থক মহাকাব্যও। মধুসূদন দত্তের দেখানো পথ ধরে পরবর্তীকালে আরও অনেকে মহাকাব্য লেখার চেষ্টা করেছেন কিন্তু সেগুলোর কোনোটিতেই মহাকাব্যের প্রকৃত লক্ষণ ও গুণাবলী প্রকাশ পায়নি।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ প্রকাশিত হয় ১৮৬১ সালে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবর্ষে। প্রকাশের পর এই মহাকাব্যটি ইতোমধ্যে পেরিয়ে এসেছে সার্ধশত বর্ষ। দেড়শ বছরের ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত মহাকাব্যটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল হয়ে আছে। প্রথম অবস্থায় মহাকাব্যটি দুই খণ্ডের বের হয়েছিল। প্রথম খণ্ড বেরিয়েছিল ১৮৬১ সালের জানুয়ারি মাসে। এই খণ্ডে ছিল প্রথম থেকে পঞ্চম সর্গ পর্যন্ত। আর দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ পেয়েছিল একই বছরের প্রথমার্ধে। এখানে ছিল ষষ্ঠ থেকে নবম সর্গ। মেঘনাদবধ কাব্যের কাহিনী মাইকেল মধুসূদন দত্ত নিয়েছিলেন রামায়ন থেকে। রামের ছোটভাই লক্ষণের হাতে রাবনের ছেলে মেঘনাদের মৃত্যুর যে কাহিনী রামায়নে রয়েছে—তারই ওপর ভিত্তি করে মাইকেল মধুসূদন দত্ত এই মহাকাব্যটি রচনা করেন। তিনি কাহিনী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেমন প্রাচ্যের দিকে নজর দিয়েছেন তেমনি এর গঠন বিন্যাসের জন্য ইলিয়াড, ডিভাইন কমেডিয়া, জেরুজালেম ডেলিভার্ড, প্যারাডাইস লস্ট, মহাভারতের মতো মহাকাব্য থেকে তিনি উপাদান সংগ্রহ করেছেন। আর এ সবের মিশেলে তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্য রচনা করেছেন। যা এখনো পর্যন্ত আমাদের শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য। তবে এই উপাদান সংগ্রহ এতে করে মধুসূদন দত্তের কবিকৃত্তির কোন অঙ্গহানি হয়নি। তার মৌলিকত্বের শিরোপায় কোনো ছেদ পড়েনি। বরং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিলনে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ নতুন রূপ ধারণ করেছে। তিনি মহাকাব্য রচনার জন্য পাশ্চাত্যের কাব্যকৌশল নিয়েছিলেন কিন্তু কাহিনীর ক্ষেত্রে প্রাচ্যের বিষয়কেই ধারণ করেছেন। আর এই দুইয়ের মিশেলেই নতুনরূপ ধারণ করেছে মেঘনাদবধ কাব্য। এই কাব্যের মাধ্যমে মাইকেল মধুসূদন দত্ত দেশপ্রেমকে বড় করে দেখিয়েছেন। একইসঙ্গে মানুষের জয়গান করেছেন।
বাংলাসাহিত্যে—আধুনিক যুগে প্রবেশের আগে মূলত দেবদেবীর জয়গান নির্ভর ছিল। বিশেষত পুরো মধ্যযুগের সাহিত্য ছিল দেবদেবী নির্ভর। এ ধারা থেকে আধুনিকতার শুরুতে যখন মানষের জীবন তার সুখ-দুঃখকে সাহিত্যের বিষয় করা হচ্ছে তখন মাইকেল মধুসূদন দত্তের এই কাব্য নতুনত্ব নিয়ে আমাদের সাহিত্য ভূবনে। এই নতুনত্ব সব দিক থেকেই। কারণ এটিই আমাদের প্রথম মহাকাব্য। এখানে নতুন ছন্দের—অমিত্রাক্ষরের সার্থক ব্যবহার দেখানো হল। যদিও তিনি তিলোত্তমাসম্ভব কাব্যে প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার করেছিলেন। কাব্য রচনার কৌশলের ক্ষেত্রে যেমন মাইকেল মধুসূদন দত্ত এখানে স্বাতন্ত্র্য নির্মাণ করলেন, তেমনি ভাবের ক্ষেত্রেও নিয়ে এলেন স্বাতন্ত্র্য। তিনি এখানে পুরো বিদ্রোহীর ভূমিকাই পালন করেন। কারণ মূল রামায়নে রাম ও লক্ষণ দেবতা। আর রাবণ রাক্ষসরাজ। বাল্মীকির রামায়ণে রাম-লক্ষণকে দেবতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর রাবন অত্যাচারী রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতাকে অন্যায়ভাবে হরণকারী। রামায়ণে তাই স্বাভাবিকভাবেই রাবনের প্রতি মানুষের ঘৃণা ও বিরক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু রামায়ণ থেকে কাহিনী সংগ্রহ করলেও মাইকেল মধুসূদন দত্ত মূলের প্রতি সমর্পিত থাকেননি। তিনি তার ‘মেঘনাদ বধ কাব্যে’ রাবণ চরিত্রকেই বড় করে দেখিয়েছেন।
এখানে রাম-লক্ষণই বরং অপরাধী; কারণ তারা রাবণের রাজ্য আক্রমণ করেছে। রাবণ তার মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য সর্বস্ব ত্যাগী। প্রজাদের যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করছে। নিজের সন্তানদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠাচ্ছে। একে একে প্রিয় সন্তানদের যুদ্ধের মাঠে হারানোর বেদনায় অসহায় হয়ে উঠছে। এভাবে পুরো কাব্যে মুধুসূদন দত্ত রাবণের চরিত্রকে রাক্ষস থেকে মানুষে পরিণত করেছেন। তার অঙ্কিত রাবন হয়ে উঠছে প্রজাবৎসল এক স্নেহময় পিতা; দেশপ্রেমিক রাজা। যে নিজের মাতৃভূতি রক্ষার জন্য সর্বস্ব হারাতেও প্রস্তুত। সবকিছু ছাপিয়ে রাবণের কাছে বড় হয়ে উঠেছে জন্মভূমি রক্ষা। তাই প্রিয় পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুতে যখন রাবনের স্ত্রী শোকাহত, রাবন নিজেও পুত্র হারানোর বেদনায় শোকাকূল তখনো সে পুত্রের প্রাণ বিসর্জনকে প্রশংসা করে বলছে— ‘জন্মভূমি-রক্ষাহেতু কে ডরে মরিতে? যে ডরে, সে মূঢ়; শত ধিক তারে।’ রাবনের এই উক্তি থেকেই বোঝা যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এ রাক্ষস রাবনকে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরেছিলেন। ঠিক একইভাবে মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার কাব্যে রাবনের পিতৃহৃদয়ের হাহাকার- অসহায়তা তুলে ধরছেন। রাবনের মতো সন্তানবাৎসল পিতার চরিত্র মাইকেল মধুসূদন দত্তের আগে আর কেউ বাংলা সাহিত্যে তুলে ধরেননি। পুত্রের মৃত্যুতে পিতৃহৃদয়ের যে হাহাকার রাবনের মুখ দিয়ে বেরিয়েছে তা চিরকালীন সাহিত্যের ইতিহাসেই বিরল।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিসর্জন নাটকে জয়সিংহের মৃত্যুতে পিতা রঘুপতির হাহাকার অথবা সোহরাব-রোস্তমে পুত্র সোহরাবের মৃত্যুতে পিতা রোস্তমের হাহাকার। তবে রঘুপতি অথবা রোস্তমের পিতৃ হৃদয়ের কান্নার সাথে রাবনের পিতৃহৃদয়ের কান্নার তুলনা চলে না। রাবন একজন চিরন্তন পিতৃমূর্তি। যিনি পুত্রশোকের ভেতরেও নিজের কর্তব্যকর্মে স্থির। যিনি নিহত পুত্রের জন্য শোক করছেন—আবার একইসঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এক পুত্রকে হারিয়েছেন কিন্তু আরেক পুত্রকে মাতৃভূমি রক্ষার জন্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে উৎসাহ দিচ্ছেন। পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুতে তাই রাক্ষস রাজ রাবন চিরকালীন পিতা বলে ওঠেন:
যে শয্যায়-আজি তুমি শুয়েছ, কুমার
প্রিয়তম, বীর-কুল-সাধ এ শয়নে
সদা! রিপুদলবলে দলিয়া সমরে,
জন্মভূমি-রক্ষাহেতু কে ডরে মরিতে?
যে ডরে, সে মূঢ়; শত ধিক তারে!
তবু, বৎস, যে হৃদয়, মুগ্ধ মোহমদে
কোমল সে ফুল-সম। এ বজ্র-আঘাতে,
কত যে কাতর সে, তা জানেন সে জন,
অন্তর্য্যামী যিনি; আমি কহিতে অক্ষম।
হে বিধি, এ ভবভূমি তব লীলাস্থলী;
পরের যাতনা কিন্তু দেখি কি হে তুমি
হও সুখী? পিতা সদা পুত্রদুঃখে দুঃখী
তুমি হে জগৎ-পিতা, এ কি রীতি তব?
হা পুত্র! হা বীরবাহু! বীরেন্দ্র-কেশরী!
কেমনে ধরিব প্রাণ তোমার বিহনে?
রাবন চরিত্রের এই আকুলতা, নিজের ভেতরে নিজে সান্ত্বনা খুঁজে ফেরার এই ছবির মধ্য দিয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যে পিতার হৃদয়ের যে বিলাপ ধ্বনি তৈরি করেছেন তা আজ—দেড়শ বছর পেরিয়ে এসেও শাশ্বত, অমলিন। কারণ রাজসভায় বসে রাবন যখন দূতের মুখে পুত্র বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ শুনলেন তখন তিনি নিজে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কেমন করে ফুলদল দিয়ে বিধাতা শিমুল গাছ কেটে ফেললেন। রাবনের আকুলতা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন তিনি বলেন:
হা পুত্র, হা বীরবাহু, বীর-চূড়মণি!
কি পাপে হারানু আমি তোমা হেন ধনে?
কি পাপ দেখিয়া মোর, রে দারুণ বিধি,
হরিলি এ ধন তুই? হায় রে, কেমনে
সহি এ যাতনা আমি?
এই কাব্যজুড়ে পুত্র হারানোর শোকে রাবনের এই হাহাকার, বিলাপের জন্য সমালোচকরা মেঘনাদবধ কাব্যে বীররসের অনুপস্থিতির কথাও বলেছেন। কেউ কেউ এই মহাকাব্যকে করুণ রসের মহাকাব্য বলেও চিহ্নিত করতে চেয়েছেন। তবে যেভাবে বিচার করি না কেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার মেঘনাদবধ কাব্যে রাবন চরিত্রের মধ্যে চিরকালীন পিতার যে ছবি এঁকেছেন অন্য আর আর কারণের মধ্যে এই একটি কারণে আরও বহুকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।