প্রকৃতিকে অস্বীকার করলে, প্রকৃতি কিন্তু মানুষকে বিন্দু মাত্র ছাড় দেয় না। আমার মনে হয়, এই প্রকৃতির করাল গ্রাস এবং ভয়ঙ্কর আঁচড় কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু আমরা যদি প্রশান্ত মহাসাগরের ঢেউ থামানোর জন্য মাটি দিয়ে বাঁধ দেই, সেটা মূর্খতার নামান্তর। কিন্তু প্রকৃতির আঘাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য টেকসই উন্নয়ন কিছুটা হলেও সহায়ক।
একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখা যায়, যে গ্রামে শিক্ষার হার কম, সেখানে উপাসনালয়ের প্রভাব বেশি। যে গ্রামে শিক্ষার হার বেশি, সেখানে এর প্রভাব নেই বললিই চলে। ধর্ম মূলত একটা বিশ্বাস, যা চোখে দেখা যায় না, অনুভব করা যায়, লোভেরও ক্ষেত্র বটে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন যে, লোভী মানুষ মায়ের কোলেও থাকে আবার ঝিয়ের কোলেও থাকে। তাদের লক্ষ্য মুনাফা। তারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, আবার নাস্তিকতা নিয়েও ব্যবসা করে। যখন যেখানে যায়, তা তাদের হয়ে যায়। গোলাপ ফুল দানের মধ্যে কিন্তু কোনো ভালোবাসা নেই, যা থাকে; সেটা ছলনা। কারণ প্রেম বা সম্পর্ক টেকাতে গেলে এমন ছলনা প্রয়োজন।
একটা বিষয় খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন, সেটা হলো অপরাধী সবসময় নিজেকে ভালো সাজার প্রমাণ দিতে চায়। সে যদি স্বামী হয়, তবে দেখবেন তার আকাম-কুকাম যেন হাইড থাকে, সেজন্য বিশেষত স্ত্রীকে সাপ্রাইজ দিতে চায়, সেখানে গিফট একটি কৌশলমাত্র। মগজ থাকলে আজই খুঁজুন পেয়ে যাবেন।
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি হাজারো অভিযোগ, এই অভিযোগ মূলত সিস্টেমের। কিন্তু এই সিস্টেমের রক্ষক কিন্তু আমরাই। যেমন আমি চাকরির জন্য দূরে থাকি, বাচ্চাদের দেখাশোনা আমার স্বামী করছেন। তিনি ব্যবসাও করছেন। তার সমস্যা হচ্ছে না। তিনি কিন্তু নিয়ম করে বাচ্চাদের পোশাক পরিষ্কার করেন, টেককেয়ার করেন। সাংসারিক কাজে যথাসম্ভব সহযোগিতা করেন। বাচ্চারা জানে, মা দূরে কিন্তু বাবা তো কাছে থাকে। এখন আমি যদি বাড়ি থেকে দাবি করি, তুমি কেন সংসারের কাজে হাত লাগাও না, বাচ্চাদের টেককেয়ার করো না, এটা কিন্তু মানসিক অশান্তি ছাড়া কিছু নয়। একজন নারী যদি আত্মপ্রত্যয়ী না হয়, তো সে পদে পদে লাঞ্ছিত হবে; এটাই স্বাভাবিক। যে পুরুষ আত্মপ্রত্যয়ী নয়, তাকেও তো লাঞ্ছিত হতে হয়, পরিবার, সমাজ ও নারীর নিকট।
একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় তার কাজ। আমরা সবাই জানি, অর্থনৈতিক মুক্তি না হলে কেউ স্বাধীন নই। কামাই থাকলে জামাই লাগে না, যারা বলেন; তারা ভুল বলেন। একজন পুরুষ অবশ্যই প্রয়োজন, তার সঙ্গে টাইম স্পেন্ড করা, দুঃখে, বিপদে-আপদে সহযোগিতা করা, এটা দায়িত্ব। এজন্য লেখাপড়া শিখে আপনাকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে হবে। আমরা সবাই জানি বেকার ছেলেটার দায়িত্ব রাষ্ট্র গ্রহণ করে না। এখন ব্যক্তিগত সুখ পাওয়ার জন্য যদি গোটা পুরুষ জাতিকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেই, সেটা কি সাংঘর্ষিক নয়? একজন স্বাধীন মানুষের ডজন ডজন বন্ধু থাকে না, থাকে না সঙ্গদোষও। কারণ স্বাধীন মানুষ সবসময় সত্যর পক্ষে কথা বলে।
পুঁজিবাদ এখন ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করছে। যে কারণে বাজার এখন বাহারি হিজাব এবং বোরখায় সয়লাব। থ্রিপিস, জিন্সে নতুনত্ব আসে না, পুরুষের পোশাক সেই গৎবাঁধা। পুঁজিবাদ ব্যবসা করে নারী রিলেটেড পণ্য নিয়ে। নারীকে নিয়ে। নারীদের হাইহিলের কতটা দৈর্ঘ্য বাড়ালে বাজার গরম হবে। শিক্ষিত নারীরা হিজাব দিয়ে মাথা মুড়ে দিচ্ছে। মাথায় ওড়না পেঁচানোর রহস্য আমি জানি না, তবে এটা জানি বিকৃত মনের মানুষ কখনো হিজাব-বোরখা ভেরিফাই করে না। আপনার দেখবেন প্রতিবাদী মেয়ের নিকট মানুষ ভিড়ে কম, ওখানে বিপদের আশঙ্কা থাকে। অত্যাচার তো দুর্বলদের ওপর বেশি হয়! খেয়াল করলে দেখবেন, ঝগড়াটে ছেলের বউকে শাশুড়ি-ননদ ভয় পায়। নারীদের উচিত আত্মমর্যাদা বাড়ানো।