মোহাম্মদ নূরুল হক—কবি-সমালোচক-প্রাবন্ধিক-গবেষক-ছোটকাগজ সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের ১২ জুন নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কেরামতপুর গ্রামে জন্ম। পেশায় সাংবাদিক। তার প্রবন্ধের বিষয় বিচিত্র। সাহিত্যের নানা শাখায় সমান বিচরণ থাকলেও প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবেই পরিচিত তিনি।
পেশাগত জীবনে কিছুদিন দৈনিক ইত্তেফাকে সাহিত্য পাতায় কাজ করেছেন। ছিলেন দৈনিক আমাদের সময়ের বার্তা সম্পাদক, বাংলা ট্রিবিউনের উপ-বার্তা সম্পাদক, সারাবাংলার বার্তা সম্পাাদক, রাইজিংবিডির বার্তা সম্পাদক, দৈনিক সময়ের আলো’র বার্তা সম্পাদক, ইত্তেফাক-এর অনলাইন সেকশনের বার্তা সম্পাদক। বর্তমানে ঢাকা বিজনেস-এর বার্তা সম্পাদক।
সম্পাদনা: সাহিত্যবিষয়ক ছোটকাগজ, মেঠোপথ (১৯৯৬ থেকে), চিন্তাসূত্র (১৯৯৬ থেকে), প্রাকপর্ব (২০০০ থেকে ২০০৫) ও অনুপ্রাস (২০০১-২০০৫)।
প্রকাশিত কবিতার বই: মাতাল নদীর প্রত্নবিহার, স্বরচিত চাঁদ, উপ-বিকল্প সম্পাদকীয়, লাল রাত্রির গান।
প্রবন্ধগ্রন্থ: সাহিত্যে দশক বিভাজন ও অন্যান্য, সমালোচকের দায়, অহঙ্কারের সীমানা ও অন্যান্য, সাহিত্যের রাজনীতি, সমকালীন সাহিত্যচিন্তা, কবিতার সময় ও মনীষার দান, আহমদ ছফার বাঙালিদর্শন ও অন্যান্য এবং বাংলা উপন্যাসে বিধবা: বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথ-শরৎ।
মূল্যায়ন
১) আমাদের সময়ের এবং বাংলা কবিতার যে আমিত্বময় বৈশিষ্ট্য, নিজেকে প্রকাশের যে আকুলতা, সেই আকুলতা মোহাম্মদ নূরুল হকের থাকলেও, তার কবিতাকে ঠিক আমিত্বময় বলে অভিহিত করা যায় না। বরং ব্যক্তি ‘আমি’র বাইরে এসে তিনি নিজেকে প্রকাশের অন্তর্তাগিদ অনুভব করেছেন। ফলে অন্তর্গত বেদনার চেয়ে বহিস্থ বিষয়ের প্রতিই তিনি দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছেন। যে অভিজ্ঞতার ভেতরে দিয়ে তিনি পাঠককে নিয়ে চলেন, তাকে তার কবিতা শুধু শব্দের আগ্রাসন হয়েই পাঠককে তাড়িত করে না, সুখপাঠ্য পঙ্ক্তিমালার সঙ্গে-সঙ্গে পাঠকের ভাবনার দুয়ারেও কড়া নাড়ে। মোহাম্মদ নূরুল হকের কবিতা: সময়ের ভিন্ন সুর ॥ মামুন রশীদ
২) মোহাম্মদ নূরুল হকের প্রবন্ধগুলোর মধ্যে একটা বড় পরিধিজুড়ে আছে সমকালীন কবি-সাহিত্যকদের লেখা নিয়ে সাহিত্যসমালোচনা। নন্দনতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন জনের কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটকসহ নানা বিষয়ের প্রসঙ্গ ও প্রবণতা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী সমালোচনা লিখেছেন তিনি। সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে প্রবন্ধসংখ্যা ও সারবত্তার বিচারে এইক্ষেত্রে তিনি অন্যতম-অনন্য। যাদের নিয়ে তিনি প্রবন্ধ লিখেছেন, তারা অনেকেই ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত। মোহাম্মদ নূরুল হক: প্রাগ্রসর প্রাবন্ধিক ॥ ফারুক সুমন
৩) মোহাম্মদ নূরুল হকের কবি পরিচয়টির সমান্তরালে চলে আসে আরো কয়েকটি পরিচয়। তারমধ্যে বিশেষ উজ্জ্বলতর হলো প্রাবন্ধিক পরিচয়টি। কাব্যচর্চার এহেন গভীর সাধনার ভেতরেই তিনি চর্চা করে চলেছেন গদ্যের এবং মোটাদাগে গদ্য নামীয় প্রপঞ্চের ভেতরে সাহিত্যের যতসব শাখা রয়েছে তার সবগুলো শাখাতেই তিনি আলো ফেলেছেন তাঁর নিজস্ব বীক্ষণের। স্বতন্ত্র স্বরের লেখক : কবিতায় গদ্যে ॥ এমরান কবির
পুরস্কার-পদক: প্রবন্ধের জন্য ‘বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার-২০২০’ ও ঢাকা সাব এডিটর্স কাউন্সিল সম্মাননা। কবিতার জন্য পেয়েছেন ‘চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি দোনাগাজী পদক-২০২১’,
তথ্যসূত্র: চিন্তাসূত্র, জাগোনিউজ
সংযুক্তি:
১। মোহাম্মদ নূরুল হকের কবিতা: সময়ের ভিন্ন সুর ॥ মামুন রশীদ
২। স্বতন্ত্র স্বরের লেখক: কবিতায় গদ্যে ॥ এমরান কবির
৩। মোহাম্মদ নূরুল হক: প্রাগ্রসর প্রাবন্ধিক ॥ ফারুক সুমন
৪। মোহাম্মদ নূরুল হক: কবিতায় বাস্তবতার সীমারেখাকে লঙ্ঘন করেননি ॥ রিপন আহসান ঋতু
৫। মোহাম্মদ নূরুল হকের প্রবন্ধ: যুক্তির শৃঙ্খলা ও শিল্পের দায় ॥ আজিজ কাজল
৬। মোহাম্মদ নূরুল হকের কবিতা: প্রজ্ঞার শিল্পরূপ ॥ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ