চিন্তাসূত্র ডেস্ক
চীনকে কেন চায়না বলা হয়, জানেন কি? তাহলে আসুন জেনে যাওয়া যাক। তার আগে একটু ভাবুন তো এক দেশের দুই নাম বেশ শুনতে কেমন! বিস্ময়কর হলেও সত্যি, পৃথিবীতে বেশক’টি দেশ আছে, যেগুলোর দুটি করে নাম রয়েছে। যেমন, ‘চায়না’কে আমাদের দেশে ‘চীন’ বলা হয়। প্রকৃত অর্থে দেশটির মূল নাম কী? চীন, না কি চায়না?
চীন ও চায়নার বিভ্রান্তি দূর করতে হলে আমাদের দেশটির ইতিহাসের দিকে নজর দিতে হবে। আমরা যাকে চীন বা চায়না নামে চিনি, সেই দেশটির নাগরিকরা কিন্তু সে নামে তাদের দেশকে জানে না। বরং তারা তাদের ভাষা অনুযায়ীই এর নামকরণ করেছে। তাদের ভাষা হলো ম্যান্ডারিন চাইনিজ। এ অনুসারে তারা চীন বা চায়না বলে না। বলে, জংওয়ে। যার অর্থ ইংরেজিতে widdle state/ Central state বাংলায় মধ্যপ্রদেশ।
তাহলে এবার প্রশ্ন আসতেই পারে, আমরা কেন এই দেশকে চীন বা চায়না বলছি। সেও এক লম্বা ইতিহাস। তবে এটি সরসরি চিন বা চায়না নয়। মূলত কয়েক যুগের কালক্রমে এই নামে এসে উপস্থিত হয়েছে দেশটি। ২২১ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে দেশটির স্থাপনা করেন Qin Shi Huang. যাকে দেশটির প্রথম সম্রাট নামে অভিহিত করা হয়। তার রাজত্বকালেই চীনের প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। হন চাইনিজ জাতিদের একত্রিত করতে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। সবার জন্য একই ভাষা ও মুদ্রারও প্রচলন করেন। ফলে তার নাম অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে দেশটির নামকরণ হয়।
এক্ষেত্রে আবারও একটি বিষয়ের অবতারণা করতে হয়। মূলত ম্যান্ডারিন চাইনিজদের ভাষা pictographic Language থেকে। যেহেতু এই ভাষার একেকটা অক্ষর ছবির মতো। আর এগুলো লিখতেও বিভিন্ন অক্ষর মনে রাখতে হয়। এজন্য চাইনিজ ভাষা আয়ত্ত করাও বেশ শক্ত। একটি অক্ষর লিখতে অনেকগুলো stroke (টান) ব্যবহার করতে হয়। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় আসার পর দেশের সাক্ষরতা বাড়াতে তারা pinyin-এ চাইনিজ লেখা শুরু করে। যা ল্যাটিন স্ক্রিপ্টে হলেও ইংরেজির মতো। কিন্তু এর উচ্চারণ এক নয়। পিনয়িনে q-কে উচ্চারণ করা হয় ‘চ’ এর মতো। x-এর উচ্চারণ ‘শ’ হিসেবে। তাই Qin-এর উচ্চারণ কুইন না হয়ে যায় ‘চীন’। আর সে অনুযায়ী প্রথম সম্রাটের রাজবংশের নাম হলো চীন।
ইউরোপীয়রা এই দেশকে তাদের রাজা চীনের নামেই সম্বোধন করতে থাকে। ইউরোপীয়দের উচ্চারণে সেটা চীন না হয়ে চায়না হয়ে যায়। রাজার নামানুসারে যেহেতু চীন, ফলে এটিই সঠিক। চায়না নয়। তবে ভাষা মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম তাই যে মুলুকের ভাষার উচ্চারণ যেভাবে হয়, তারা সেভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করে। ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অবলম্বনে