পালাই এ দেশ ছেড়ে
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো উঁচু উঁচু বাড়ি
প্রাণের ভয়ে মানুষগুলোর কী যে আহাজারি!
ধসে পড়লে দালানকোঠা? এই কথাটা ভেবে-
যে যার মতো নেমে এসে থাকে সবাই সেভে।
কবে থেকেই বারান্দাতে খাঁচার মধ্যে আছি,
আমরা-ও চাই ওদের মতো দালান ছেড়ে বাঁচি।
বিষাদমাখা আহাজারি যায় না ওদের কানে,
বন্দি থাকার কষ্ট কেমন ওরা কি আর জানে?
ডানা মেলার নেই আনন্দ ডানা আছি গুঁজে,
ইশ! কতদিন কীটপ্রতঙ্গ খাইনি খুঁজে খুঁজে।
পাইনি গায়ে নরম বাতাস সবুজ পাতার ছোঁয়া,
হয়নি আহা! বনে থাকা ছনের ঘরে শোয়া।
এসব কথা ভাবতে গিয়ে দালানটা ফের নড়ে,
মরার ভয়ে মনটা হঠাৎ কেমন কেমন করে।
দিন গড়ালেই ভূমিকম্প, যায় আতঙ্ক বেড়ে-
ও মানুষ ভাই দরজা খোলো পালাই এ দেশ ছেড়ে।
আসাদ-মতিউর
কোকিল ডাকে পাতার ফাঁকে কুহু কুহু সুর,
প্রশ্ন করে- ‘কোথায় গেল আসাদ-মতিউর?
অধিকারের মিছিল নিয়ে দে রে আবার ডাক,’
কোকিলের ঐ অমন সুরে মুচকি হাসে কাক।
কাক হেসে কয়- ‘ওরে কোকিল বাজে বকা ছাড়্,
মিছিল নিয়ে আসাদ মতি ফিরবে না তো আর।
সেই যে কবে রাজপথে ঐ ঢেলে দিলো প্রাণ,
তারচে’ ভালো ধর্ রে কোকিল স্বাধীনতার গান।’
কোকিল তখন ডাগর চোখে কাককে ডেকে কয়,
‘আসাদ, মতির সাহস নিয়েই স্বাধীনতার জয়।
দেশ হয়েছে স্বাধীন ঠিকই স্বাধীনতা নাই,
রাজনীতিতে অস্থিরতা, মানুষ পুড়ে ছাই।
মানুষপোড়া গন্ধে আমার বদলে গেছে সুর,
তাই তো আমি খুঁজে বেড়াই আসাদ, মতিউর।’
ভোট
ভোটের আগে সকল নেতা আহা! কী যে সৎ,
সোনার স্বদেশ গড়ে তোলার খুঁজে বেড়ায় পথ,
সেমিনারে বক্তৃতা দেয়—
করবে কেউ বা ডোবা ভরাট, রাস্তা মেরামত।
মশাজাতি স্লোগান ধরে চায় না তারা ভোট,
করবে কেন ডোবা ভরাট? লাগছে দিলে চোট,
বাড়ি ভরাট অপরাধে—
করবে মামলা, এক কাতারে বাঁধবে সবাই জোট।
হঠাৎ যে এক বৃদ্ধমশা বললো ওরে থাম,
ভোটের আগে সকল নেতার এসব বলাই কাম,
ভোটের পরে সব ভুলে যায়—
ছোট বড় প্রতিশ্রুতির থাকে না আর দাম।