ছুটি শেষ। শুরু হয়েছে ক্লাস। সেই সকাল দশটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত স্কুলে থাকতে হয়। তবে, ক্লাসমেটরা সব ক্লাস মনোযোগ দিয়ে করলেও আমি গণিতের ক্লাসে প্রায়ই ফাঁকি দেই। প্রায়ই আমার সঙ্গী হয় শাহাদাত। দুজনেই গণিতের ক্লাস শুরুর আগে চলে যাই স্কুলের ছাদে। ছাদের ওপর আরও একটি ছোট ছাদ আছে। যেটি সিঁড়ির মাপে। ওই ছাদে ওঠার কোনো সিঁড়ি নেই বটে, বাঁশ ঠেকিয়ে উঠে যাই। এরপর বাঁশটা টেনে ওপরে নিয়ে রাখি। কেউ বুঝতেই পারে না, আমরা এত ওপরে ছোট্ট ছাদে। অনেক সময় অঙ্কের স্যার আমাদের খোঁজে ক্লাসমেটদের পাঠান। তারা ছাদ-পাশের পুকুর পাড়, ঝোপজঙ্গল চষে বেড়ায়, কিন্তু আমাদের পায় না। আমরা ওপর থেকে সব দেখি, আর হাসি। যেই ক্লাস শেষের ঘণ্টা পড়ে, অমনি বাঁশ বেয়ে নেমে আসি। ঢুকে পড়ি পরবর্তী ক্লাসে।
কদিন আগেও ক্লাস ফাঁকি দিয়েছি। অঙ্কের ক্লাসের জন্য বাড়ির কাজ করে আনিনি। কী করি, কী করি? শাহাদাত বললো, ‘চল, এত ভাবার কী আছে? ছাদে গিয়ে পালাই। যেই কথা, সেই কাজ। দুজনে গিয়ে উঠলাম ছাদে। এখানে বলে রাখি, যেই ছোট্ট ছাদে আমরা পালাই, সেই ছাদ কিন্তু সমতল নয়, ঢালু। কোনো কারণে পা পিছলে পড়লে সোজা চার তলা থেকে মাঠে ধপাস! তবে, ছয় ইঞ্চিখানেক উঁচু সাইড ওয়াল আছে। তাই রক্ষে। সে দিকে পা দিয়ে উঁচু অংশে মাথা রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ি। শুয়ে আকাশ দেখি, আর ভাবি। ভাবি, এভাবে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে লাভ কী? এর চেয়ে বাড়িতে পড়লেই তো ভালো হতো।
এসব ভাবতে ভাবতে শাহাদাতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ি। সে বলে, তুই পড়লি না ক্যান? তুই বাড়ির কাজ করে আনলে তো এখন পালাতে হইতো না। পাল্টা আমিও বলি, তুই কেন বাড়ির কাজ করলি না? তোরও তো পালাতে হইতো না। আমাদের তর্ক ফিসফিসানি চাপিয়ে এবার উচ্চস্বরের ঝগড়ায় পরিণত হয়। আর তখন শুনি, নিচে অর্থাৎ মূল ছাদে অনেকের পদধ্বনি। বিশ-বাইশ জনের পদধ্বনি শুনে ভয়ে আঁৎকে উঠি দুজনেই। হঠাৎই আমরা চুপসে যাই। কিন্তু ঠিক তখনই দেখি, ছোট্ট ছাদের সঙ্গে বাঁশ ঠেক দেওয়া হয়েছে। কে আসছে ওপরে? বুঝতে পারছি না। হাত-পা ঠকঠক করে কাঁপছে। তবু খরগোসের মতো সতর্ক কান, আর বাজপাখির মতো তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি সেই বাঁশের দিকে। দেখি, কিছুক্ষণের মধ্যে দপ করে ছোট্ট ছাদে এসে নামলো সেলিম। তাকে দেখে আমি তো ভয়ে জড়োসড়ো। দুজনেই প্রমাদ গুনতে থাকি।
সেলিম আমাদের দুজনের দুই হাত ধরে চিৎকার দেয়—‘স্যার দুইটারেই পাইছি।’ নিচ থেকে জাফর উল্লাহ স্যার বলেন, ‘নিয়ে আয়।’ সেলিমের একার পক্ষে সম্ভব না আমাদের দুজনকে টেনে নামায়। কিন্তু জাফর উল্লাহ স্যার যেহেতু জেনে গেছেন আমরা এখানে, সেহেতু আর পালিয়ে লাভ নাই। নিজে থেকেই দুজন নেমে আসি।
ওপর থেকে নামতে না নামতেই স্যার আমাদের দুজনের কান ধরে টানতে টানতে নিয়ে যান ক্লাস রুমে। এরপর একজোড়া বেত একসঙ্গে করে নেন। সোজা তাকান আমার দিকে—‘দে হাত বাড়িয়ে দে।’ কেন পালালাম, কেন ক্লাস করলাম না—এসব প্রশ্ন করার প্রয়োজনও মনে করলেন না স্যার। ভেবেছিলাম, স্যার কোনো প্রশ্ন করলে যেকোনো একটা কৈফিয়ত দেবো। তাতে যদি শাস্তির পরিমাণ কিছুটা কমে। কিন্তু না। স্যার কোনো প্রশ্নই করলেন না। কোনো সাক্ষ্য-তথ্য-প্রমাণ চাইলেন না। রায় ঘোষণাও করলেন না। সোজা দণ্ড দেওয়া শুরু।
আর ফন্দি আঁটতে থাকি—সেলিমকে কিভাবে জব্দ করা যায়। কিন্তু কোনো পরিকল্পনা গুছিয়ে করতে পারি না। যেটাই ভাবি, তাতেই ঝুঁকি দেখি। নিশ্চিন্তে কাজটা হাসিল করার নিশ্চয়তা পাই না। সাহসও না।
শাহাদাত ও আমি—দুজনেরই দুই হাত সামনের দিকে বাড়িয়ে দেওয়া। স্যার পালা করে দুজনের হাতেই চলছে সপাং সপাং বেত্রাঘাত। শাহাদাৎ চিৎকার করে কাঁদছে। আমি নীরবে। চোখের পানিতে চিবুক, বুক, শার্ট ভিজে একাকার। তবু শব্দ করি না। এভাবে কতক্ষণ মার খেয়েছি, মনে পড়ে না। তবে, দুই হাতের তালুন লাল হয়ে হয়ে উঠেছে, এছাড়া কবজি পার হয়ে কনুই পর্যন্ত বেত্রাঘাতে কেটে কেটে যাচ্ছে, সেটা বুঝতে পারছি না। এবার সাধারণ ব্যথা ভুলে যাচ্ছি, পরিবর্তে মরিচ লাগিয়ে দিলে যেমন জ্বলুনি শুরু হয়, তেমনই হচ্ছে। চোখে অন্ধকার ঘনিয়ে এলো। মনে হলো, পুরো পৃথিবী ঘুরছে। চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-তারা—সবই ঘুরছে। কেবল আমি স্থির। একসময় দেখি, আমার বাম চোখের ঠিক কোণায় কয়েকটি জোনাকি জ্বলছে। আমার মাথা ঘুরে ওঠে। কেবল নাকের ভেতর একধরনের লবণস্বাদ অনুভব করলাম। আর কিছু মনে নেই।
যখন হুঁশ ফিরে এলো, তখন কাছারিতে। চারদিকে ধনু কাকা, খোকন, বেলাল, দিদার, রাসেল। মাথায় পানি ঢালছে। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি, স্যাভলন লাগানো। বেলাল কেবল গজগজ করছে—সেলিমের কী দরকার ছিল পণ্ডিতি করার? এই ব্যাটার জন্য আজ এরা মাইর খাইলো। সেলিমরে কোনো মাফ নয়। এটার একটা বিহিত করণ লাগবোই। বাকিরাও তার কথায় সায় দেয়। শুনে আমার ভালো লাগে। মনে মনে ক্ষেপে উঠি সেলিমের ওপর। এই ব্যাটা প্রাইমারি স্কুল থেকেই আমাকে জ্বালিয়ে মারছে। একবার চৌরাস্তাবাজারে আছাড় দিয়ে শাস্তি দিয়েছি। তাও ব্যাটার আক্কেল হলো না। এবার মোক্ষম একটা শাস্তি দেওন লাগে। সময় আসুক। এর আগে আমি তো সুস্থ হই। ধনু কাকা-খোকনরা চলে গেলে আমার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। রাসেল দেখে, আমার কপাল পুড়ে যাচ্ছে। সে বলে, ‘ভাইজ্জি বঙ্কিম বাবুর কাছে গেলাম।’ বলি, ‘যা।’ কিছুক্ষণ পর প্যারাসিটামল-ফাইমক্সিল, বেলা বিস্কুট নিয়ে রাসেল হাজির। আমি কোনো রকম উঠে বসি। রাসের বিস্কুট এগিয়ে দেয়। বিস্কুটে এক কামড় দিতেই চমকে উঠি। দেখি দরজায় জাফর উল্লাহ স্যার। মাথা নিচু করে বসে থাকি। স্যার এগিয়ে আসেন। আমি ভয়ে কাঁপতে থাকি। আবারও মারবেন নাকি?
স্যার কাছে আসেন। আমার পাশে খাটে বসেন। কপালে হাত দিয়ে দেখেন, থার্মোমিটার জিহ্বার নিচে দিয়ে দেখেন। এরপর ওষুধগুলো দেখেন। বলেন, এগুলো খেলেই চলবে। আমার চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি ঝরতে থাকে। স্যার, হঠাৎ গর্জে ওঠেন—‘কান্দস ক্যান?’ আমি চুপ করে যাই। কোনো জবাব দেই না। এবার স্যার আমাকে বুকের মধ্যে চেপে ধরেন। বলেন, ‘তুই আমার ছেলে। এভাবে ক্লাস ফাঁকি দিস কেন? জানিস না, ক্লাস ফাঁকি দেওয়া আমি একদমই পছন্দ করি না। তোরা সবসময় পড়া মারবি নাকি? কোনোদিন পারবি, কোনোদিন পারবি না। তাই বলে ক্লাস ফাঁকি দিতে হবে? বল, আর কোনো দিন ক্লাস ফাঁকি দিবি?’ আমি ‘না’সূচক মাথা নাড়ি। স্যার কপালে একটা চুমু খেয়ে বলেন, কথাটা মনে থাকে যেন। এরপর স্যারের বিখ্যাত হ্যান্ড-ব্যাগ থেকে একমুঠো চকোলেট বের করে আমার হাতে দিলেন। বললেন, ‘খেয়ে দ্যাখ, খুব মজা।’
স্যার চলে গেলে রাসেল বলে, ‘ইশ এভাবে মারার সময় খেয়াল আছিল না। এখন দরদ দেখাতে আইছেন! ভাইজ্জি, সেলিমরে কিন্তুক ছাইড়বেন না। আম্নের লগে আছি।’ রাসেলের উসকানিতে আমার মনের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। শরীরের যন্ত্রণা যত কমতে থাকে, মনের যন্ত্রণা ততই বাড়তে থাকে। টানা দুই দিন জ্বরে ভোগার পর স্কুলে হাজির। সেলিম আমাকে দেখলে মুখ লুকিয়ে চলে। কথা বলে না। আমিও না। তক্কে তক্কে থাকি, কখন তাকে শিক্ষা দেওয়া যায়। কিন্তু সুযোগ পাই না। স্কুল ছুটির পর উল্টো কয়েকজন বিদ্রূপ করতে থাকে। কেউ বলে, ‘কী ক্লাস ফাঁকির মজা কেমন?’, কেউ বলে, ‘স্যারের বেত কেমন লাগলো? বাবারে বাবা, এমন মাইর জীবনেও দেখিনি। তোরা বিলাইর হাড্ডি খাইছসনি?’ তাদের বিদ্রূপের জবাব দেই না। ভেতরে ভেতরে ফুঁসতে থাকি। আর ফন্দি আঁটতে থাকি—সেলিমকে কিভাবে জব্দ করা যায়। কিন্তু কোনো পরিকল্পনা গুছিয়ে করতে পারি না। যেটাই ভাবি, তাতেই ঝুঁকি দেখি। নিশ্চিন্তে কাজটা হাসিল করার নিশ্চয়তা পাই না। সাহসও না।
বলি, ‘জি স্যার।’ এরপরের কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না—স্যারের হাতের বেতজোড়া আর আমার পিঠ জানে কী ঘটতে যাচ্ছে।
এভাবে কেটে গেছে প্রায় মাসখানেক। আমরা ক্লাস ফাঁকির জন্য বেত্রাঘাত খেয়েছি, তার স্মৃতি অনেকেই ভুলতে বসেছে। এমন সময় একদিন ক্লাসে আমি নতুন দুষ্টুমি চালু করি আমি। দরজার দিকে তাকিয়ে থাকি অনেক্ষণ ধরেই। এরপর হঠাৎই সজোরে ‘স্ট্যান্ড আপ’ বলেই দাঁড়িয়ে যাই। কেউ কিছু না বুঝেই আমার সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে যায়। সবাই দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণ—নিয়ম। অর্থাৎ কোনো স্যারকে ক্লাসে ঢুকতে দেখলেই ক্লাস ক্যাপটেন সজোরে ‘স্ট্যান্ড আপ’ বলে নিজেই দাঁড়িয়ে যায়। অমনি সবাই তাকে অনুসরণ করে। তবে, কখনো ক্লাস ক্যাপটেন স্যারের ঢোকার বিষয়টি খেয়াল না করল অন্য যেকোনো একজন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই যেকোনো একজনের সুযোগটা আমি নেই। তবে, এই দুষ্টুমি কেবল আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। সবাই-ই কমবেশি এর চর্চা শুরু করে। এরমধ্যে সবচেয়ে পটু হয়ে উঠেছে সেলিম। সে প্রায়ই এমন করে।
সেলিমের এই স্বভাবকে আমি কাজে লাগানোর চিন্তা করি। ঠিক করি, তার এই উঠে দাঁড়ানোর সুযোগটা আমি নেবো। আজ আমি বসি দ্বিতীয় সারির বেঞ্চের ঠিক মাঝখানে। আমার ডানপাশে খায়রুল বাসার। বামপাশে সেলিম। আমার পকেটে পার্কার কলম। কিন্তু খায়রুল বাসার ঝরনা কলম বাদ দিয়ে নুতন বের হওয়া ইকোনো বলপেন দিয়ে লেখা শুরু করেছে। আজ এক ফাঁকে আমি খায়রুল বাসারের পকেট থেকে তার বলপেনটা নিয়ে নেই
এদিকে, ইংরেজির ক্লাস শেষ। একটু পর বাংলার ক্লাস। তবে, এখনো ঘণ্টা পড়েনি। কিন্তু তার আগেই সেলিম হঠাৎই দরজার দিকে তাকিয়ে সজোরে হাঁক ছাড়ে—‘স্ট্যান্ড আপ’। সঙ্গে সঙ্গে সবাই দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমি বসে থাকি। সাবই দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে, কোনো স্যার আসেননি। এবার সবাই বসে পড়ে। কিন্তু সেলিম বসতে গিয়েই ‘ও মাগ গো’ বলে মর্মন্তুদ চিৎকার দিয়ে ওঠে। মনে হয় কেউ যেন সাক্ষাৎ যমদূতের কবলে পড়ে জীবনের শেষ চিৎকার দিলো। তার চিৎকারে সবাই এসে জড়ো হলো। দেখে, সেলিম যেখানে বসেছিল, বেঞ্চের সেখানে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে। আমার হাতে রক্তাক্ত কলম। রক্তে সেলিমের কাপড়চোপড় ভিজে একাকার।
এই দৃশ্য দেখে ক্লাস ক্যাপটেন ইলিয়াস একদৌড়েই চলে গেলো স্যারদের কমন রুমে। সঙ্গে নিয়ে এলো বাংলার নূর নবী স্যারকে। স্যার এসেই ইলিয়াসের মুখে ঘটনার সারাংশ শুনেই সেলিমে কাছে ডাকলেন। সেলিম স্যারের কাছে যাবে কী, হাঁটতেই পারছে না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনো রকমে গিয়ে দাঁড়লো স্যারের পাশে। এবার স্যার আমাকে ডাকলেন। আমি কেন এমন ‘জঘন্য-ভয়ঙ্কর’ কাজ করলাম, তা জানতে চাইলেন। জবাবে মাথা নিচু করে বলি—‘আমার কোনো দোষ নাই। আমি তো কিছু লিখেই এভাবে আমার পাশে কলম রাখি। এখন কেউ সেই কলমের ওপর বসে গেলে আমার কী দোষ?’ স্যার গর্জে ওঠেন—‘কী বলিস, জানোয়ার? একটা ছেলেকে রীতিমতো খুন করে ফেলেছিস। তবু বলছিস তোর দোষা নাই?’ আমি এবার আরও দৃঢ়কণ্ঠে বলি, ‘না, স্যার। আমার কোনো দোষ নাই?’ স্যারকে এবার অসহায় মনে হয়। তিনি সবার উদ্দেশে বলেন, ‘তোরা বল নূরুল হকের দোষ আছে কি না?’ এবার সবাই সমস্বরে বলে, ‘আছে। আছে।’
ভেবেছিলাম, কেউ না কেউ আমার পক্ষ নেবে। কিন্তু না। কেউ আমার পক্ষ নিলো না। আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। স্যার আমার কান ধরে বললেন, ‘কী তোর দোষ নাই? দোষ স্বীকার কর।’ বলি, ‘জি স্যার।’ এরপরের কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না—স্যারের হাতের বেতজোড়া আর আমার পিঠ জানে কী ঘটতে যাচ্ছে।
চলবে..
জীবনের যতিচিহ্নগুলো-৩৯ ॥ মোহাম্মদ নূরুল হক