[পর্ব-১৭]
ক্লাস ফাইভে ভর্তি হওয়ার দুই-তিন পর নতুন বই পেলাম। সঙ্গে তিনটি খাতাও। একটি সাদা। দুটি রুল টানা। একটি বাংলার। অন্যটি ইংরেজির। ততদিনে ক্লাসের বাকিদের সঙ্গেও পরিচয় হয়ে গেছে। এরমধ্যে ধনু কাকা, খোকন ও আবুল হোসেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেশি। তবে, ধনু কাকাদের বাড়িতে তত যাওয়া হয় না—যতটা খোকনদের বাড়িতে যাই। ধীরে ধীরে এমন হয়ে গেছে যে, দুজনেই সপ্তাহে তিন দিন খোকনদের বাড়ি তো, তিন দিন আমাদের কাছারিতে থাকি। মাত্র একদিন হয়তো আলাদা থাকি। খোকন মানে কাজী মোহাম্মদ আসাদুল হক খোকন। আমাদের উচ্চতা, গায়ের রঙ, চুলের স্টাইল সবই প্রায় এক। নানা-দাদার বয়সীরা দুজনকে চিনতে অনেক সময় ভুল করে বসতেন। আমাকে খোকন আর খোকনকে নূরুল হক সম্বোধনও করতেন কেউ কেউ।
তখন খোকনদের বাড়ির সামনে দরজায় দক্ষিণপাশে রাস্তা-লাগোয়া মুদি দোকান ছিল। দোকানে বসতেন খোকনের বড় ভাই। আমাদের চৌধুরী ভাই। আমরা প্রায় স্কুল থেকে দীর্ঘপথ হেঁটে সোজা গিয়ে উঠতাম সেই দোকানে। দোকানের পেছনে একচালা আরও একটি ঘর ছিল। সেখানে ভেড়া-ছাগল বাঁধা থাকতো। দোকানের দক্ষিণ পাশে ছিল রাইস মিল। সেখানে প্রায় আসতো মিলের মালিকের ছেলে জাহাঙ্গী। আমাদের বয়সী। সেও মাঝে-মাঝে আমাদের সঙ্গে থেকে যেতো। বিশেষত চাঁদনি রাতে আমরা সব আজগুবি গল্পে মেতে উঠতাম। কখনো রাস্তার পাশের ঘাসের ওপর বসে, কখনো হারিকেন নিভিয়ে জানালা খুলে দিয়ে দোকানের গদির ওপর। তবে, আমাদের গল্প বলায় এক ধরনের আড়ষ্ট ভাব ছিল। পথচারীরা যাওয়ার সময় গলার স্বর নিচু হয়ে যেতো। যেন কেউ শুনতে পেলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। আবার পরিচিত জনদের কেউ কেউ হাট থেকে ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শুনেও ফেলতেন সেই সব গল্প। বলতেন, ‘কী রে তোরা ঘুমাস না?’ আমরা তখন চুপ করে যেতাম। নিশ্বাস পর্যন্ত ফেলতাম না। হাটুরেরা চলে গেলে শুরু হতো বাকি গল্প।
তখন চৌরাস্তা বাজারের হাটবার ছিল শুক্রবার ও মঙ্গলবার। ক্লাসমেটরা সবাই হাটবারেই হাটে যেতাম। সেদিন অভিভাবক বা স্যারেরাও কিছু বলতেন না। দুই দিক থেকেই অনুমোদন ছিল। স্কুলের বাইরে ক্লাসমেটদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ মিলতো সপ্তাহের ওই দুই দিনই। তবে, আড্ডা হতো হয়তো বাজারের দক্ষিণপাশেই আমাদের কাছারিতে, নয়তো বাজারের পশ্চিম পাশে ঘাসের ওপর বসে।
একদিন খোকন, ধনু কাকা, আবুল হোসেন, বাবলু, জাহাঙ্গীর, বেলালসহ আড্ডা দিচ্ছি। আড্ডার বিষয় জারিগান, গজল ও রূপকথার গল্প। কেউ কেউ আবার জিন-ভূতের গল্প নিয়েও হাজির। বিশেষত আসাদ ও ধনু কাকা। ধনু কাকা তো তাদের বাড়ির সূর্য আলী নামের এক জিনের কথা এমনভাবে রসিয়ে রসিয়ে বলতো, মনে হতো সত্যি সত্যি সে দেখেছে। অথবা সূর্য আলীর সঙ্গে তার গলায় গলায় ভাব। আমরাও তার গল্পের মুগ্ধ শ্রোতা।
সেদিন আসরের পর সবাই মিলে জড়ো হলাম বাজারের পশ্চিমপাশের খালি ভিটায়। সেখানে নরম ঘাসের ওপর স্যান্ডেল-জুতা বিছিয়ে তার ওপর বসলাম আয়েশ করে। বাবলুর বেশ গানের মুড ছিল। সে সতীনাথের ‘মরমিয়া তুমি চলে গেলে…’ বেশ কয়েকবার গেয়ে শোনালো। খোকনও শোনালো। খোকনের গলায় বরাবরই ভালো বাজতো, ‘আমার হাড় কালা করলাম রে আমার দেহ কালার লাইগারে…।’ কেউ গল্প বলায় উস্তাদ, কেউ গানে। আবুল হোসেন আর আমি কোনোটাই না। আমরা কেবল মুগ্ধ শ্রোতা। যে অর্থে খোকন, বাবলুরা মানুষকে মুগ্ধ করতে পারে, সে অর্থে আমরা দুজন সাক্ষাৎ ‘আমড়াকাঠের ঢেঁকি’। সে কথা গ্রামের কাকা-মামারা বলতেও ছাড়তেন না। বলতেন, তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আমরাও চুপচাপ মেনে নিতাম। তো সেদিন বাবলু-খোকনরা একই গান বারবার শোনাচ্ছিল। হঠাৎ ধনু কাকা বললো, ‘চল জিলাপি খামু।’ যেই কথা সেই কাজ। দলবেঁধে জিলাপির দোকানে হাজির। জনপ্রতি দুই পিস।
বিষয়টি খুরশিদ কাকার ভালো লাগলো না। খুরিশদ কাকা হলেন ধনু কাকার সেজ ভাই। বিয়ে থা করেছেন। তখনো বাচ্চা-কাচ্ছা হয়নি। আমাদের সন্তানের মতোই স্নেহ করতেন। তিনি এবার ক্ষেপে গেলেন।
খাওয়া শেষ। হাতে-হাতে চিনি-গুড়ের সিরা লেগে আছে। শীতের সন্ধ্যা। এই ঠাণ্ডায় পানি ধরতে ইচ্ছা করলো না। উপায় কী? ধনু কাকা তার স্বভাবসুলভ তর্জনি বারকয়েক নাচিয়ে বললো, ‘দ্যাট মিনস, আমাকেই বুদ্ধি বের করতে হবে! তোদের ভাত রান্ধে কোন পাগলে?’ আমরা তার কথায় রাগ করি না। সে আমাদের কারও কাকা, কারও মামা। আর আমরা সবাই সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো কিংবা চাচাতো ভাই। তাই বলি, ‘তোর বোনেরা, তোর ভাবিরা। তারা যদি পাগল হয়, তুই কী?’ আমাদের কথায় সে মনে হয় বেশ মজা পায়। বাম হাত বার কয়েক ঝাঁকুনি দিয়ে ক্যাসিও ঘড়িটা সোজা করে। তারপর ঘড়ির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে, ‘নাহ! বেশি দেরি করা যাবে না। বুদ্ধি পেয়ে গেছি। ব্যাটা, আমরা পানিতে হাত ধুইবো কেন? চল, তোদের বাপ-চাচাদের চাদের হাত মুছবো আমি। তোরা তোদের নানা-দাদাদের চাদরে।’ ধনু কাকার বুদ্ধিতে আমরা চমকে উঠি বটে, কিন্তু বুঝতে পারি না, সেটা কী করে সম্ভব? সেই পথও সে বাতলে দেয়—‘শোন বুড়া দেখে একজনের পাশে যাইবি। সালাম দিবি। গা-ঘেঁষে দাঁড়াইবি। এই কথা, সেই কথার ফাঁকে চাদরে দুই হাত মুছে নিবি। দেখবি বুড়ারা টেরই পাইবো না।’ এবার সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ি। আমার সামনে পড়লেন, ধনু কাকার বাবা, মানে আমার দাদা। বিনয়ে বিগলিত হয়ে সালাম দিলাম। এরপর তার সঙ্গে বাজারের এমাথা থেকে সে মাথা হাঁটলাম কিছুক্ষণ। একসময় দাদা সবজি বিক্রেতার সামনে দাঁড়ালেন। দর কষাকষিতে মগ্ন বুড়ো। এই ফাঁকে হাত মুছে নিলাম। কিন্তু চোখ এড়ালো না ধনু কাকার। ইশারায় ডাকলো। গেলাম। বলে, ‘কী রে ব্যাটা! দেখে-শুনে আব্বার চাদরেই হাত মুছলি?’ বলি, ‘তু-তু-তুইয়েনা শিখিয়ে দিলি?’ সে বলে, ‘তাই বলে আব্বার চাদরে? এটা কিন্তুক ঠিক হইলো না। যাক একশর্তে মাফ করতে পারি। জিলাপির সব টাকা তুই দিবি।’
অগত্যা মাথা নাড়ি। দোকানির কাছে গিয়ে বলি, ‘কত?’ দোকানির উত্তর—‘ছয় টাকা।’ আমার তো মাথায় বাজ। এত্ত টাকা! কোত্থেকে দেবো? আমি বাদে সবাই ধনী-গৃহস্থ পরিবারের সন্তান। ধনু কাকার নির্দেশ তো কেউ অমান্য করবে না। কিন্তু আমারও তো পকেট গড়ের মাঠ। দোকানিকে বললাম, ‘আধা ঘণ্টার মধ্যেই আসছি।’
ইশারায় আবুল হোসেনকে ডাকি। বলি চল। সে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই বলি, ‘কাছারিতে।’ কাছারিতে ফিরে বলি, ‘পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে দুই কাঁধি কলা পেকেছে। তুই তো আমার চেয়ে লম্বা। তুই কেটে নামাবি। তারপর বাজারি বেচবি।’ সেও রাজি হয়। ওই কলাসহ আবুল হোসেনকে আগেই বাজারে পাঠিয়ে দেই। আমরা সবাই জিলাপির দোকানের সামানে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় আবুল হোসেন এসে হাজির। এসেই হাঁপাতে হাঁপাতে জানায়, সে যে ১১ টাকায় কলাগুলো দোকানে বিক্রি করেছে, কিন্তু সেখানে নাকি আমার বাবাও ছিলেন। বাবা নাকি কলা দেখেই চিনে ফেলেছেন। বলেছেন, আবুল হোসেন কলা চুরি করেছে। সে যতই বলেছে, নূরুল হক বেচতে দিয়েছে, ততই উপস্থিত লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। তারা কেউ আবুল হোসেনের কথা বিশ্বাসই করতে চায়নি। শেষমেষ সে দৌড়ে আমাদের কাছে চলে এসেছে।
কী মুশকিল! এক কড়াইয়েল আগুন থেকে বাঁচতে গিয়ে আরেক চুলার আগুনে পড়লাম। বাবা-চাচার কাছে আমার একটা ক্লিন ইমেজ ছিল। আজ বুঝি ধুলিস্যাৎ হয়ে গেলো! কিন্তু আমার ইমেজ রক্ষা করতে গেলে তো আবুল হোসেনকে সবাই চোর বানিয়ে মারবে। আর তাকে বাঁচাতে গেলে আমি চোর হয়ে যাবো। মনে মনে ঠিক করি, যা হওয়ার হবে। কিন্তু আমার দোষে আবুল হোসেন কেন মার খাবে? সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দোকানে হাজির হলাম। যেখানে কলা বিক্রি করেছিল আবুল হোসেন—ক্যাশিয়ারের সামনে গিয়ে আস্তে করে বললাম, ‘কলা তো আমি বেচতে পাঠাইছি। আপনি টাকা দেন না কেন?’ দোকানি আমার বাবার উদ্দেশে চিৎকার করে বলেন, ‘ওই দেখেন কাকা, আম্নের পোলা কলার টাকা নিতে আইছে।’ বাবা আমার কাছে এলেন। বললেন, ‘তুই কলা বেচতে আনছোস? তাইলে আবুল হোসনরে দিলি ক্যান?’ আমি জবাব দিতে যাবো, তার আগেই বাজারভর্তি মানুষের সামনে কষে একথাপ্পড় বসিয়ে দিলেন আমার গালে। ব্যথা পেলেও কাঁদলাম না। ছলছল চোখে দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ।
বিষয়টি খুরশিদ কাকার ভালো লাগলো না। খুরিশদ কাকা হলেন ধনু কাকার সেজ ভাই। বিয়ে থা করেছেন। তখনো বাচ্চা-কাচ্ছা হয়নি। আমাদের সন্তানের মতোই স্নেহ করতেন। তিনি এবার ক্ষেপে গেলেন। বাবার উদ্দেশে বললেন, ‘ভাইছা, আন্নে এইটা কী করলেন? পোলারে পকেট খরচের পয়সা দেননি? না হয় কলা বেচতে আইনছে। তাই বলে বাজারভর্তি মাইনষের সামনে পিটাইবেন? ছিঃ ভাইছা।’ এরপর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে কলা বিক্রির কারণ জানতে চাইলেন। আমরাও ঘটনা খুলে বললাম। সব শুনে খুরশিদ কাকা বলেন, যা টাকা আমি দিমু।
ঠিক নাটাই গাছতলায় আসতেই নাকি সুরে বলে উঠলাম—‘তোঁ-তোঁ-তোঁরাঁ কেঁরেঁ?’ কথাটা বলেছি মাত্র, অমনি ‘ও মা গো ভূ-ভূ-ভূত’ বলেই চিৎকার দিয়েই বেলালের ভোঁ দৌড়। খোকন যেন প্রাণহীন মূর্তি। তার মুখ দিয়ে কথা সরছে না। বিষয়টি দেখে ভড়কে গেছি আমিও।
সেদিন হরিষে বিষাদ। তাই সবারই মন খারাপ। আবুল হোসেন অপমানে, রাগে, ক্ষোভে বাড়ি চলে যায় আগে আগেই। কিছুক্ষণ পর ধনু কাকা, বাবলুও চলে যায়। বাকি থাকি খোকন, বেলাল আর আমি। কিছুক্ষণ পর খোকন বাড়ির পথ ধরে। বলি, আমিও তোর সঙ্গে যাবো। আজ আর বাড়ি যাবো না। সে বলে, ‘চল।’ বেলাল বলে, ‘আমিও যাবো’। চৌরাস্তা বাজার থেকে দুইভাবে খোকনদের বাড়ি যাওয়া যায়। একনম্বর রুট—বাজার উত্তর দিকে আধা কিলো গিয়ে পূর্বদিকে এক কিলো। দুই নম্বর রুট হলো, পূর্ব দিকে এক কিলো গিয়ে, উত্তর দিকে আধা কিলো। উভয় পথই সমান। আজ চাঁদনি রাত। পূর্বদিকে হাটুরে বেশি। তাদের সঙ্গে আমাদেরও হাঁটা শুরু। যেই মাত্র পূর্বদিকের এক কিলো পথ শেষ করে উত্তর দিকের পথ ধরেছি, অমনি বেলালের মাথায় জিন-ভূতের গল্প চেপে বসলো। শুরু করে দিলো গল্প।
বাবার চড় খেয়ে আমার মন খারাপ ছিল। পুরো এককিলো পথ কেউ কথা বলিনি। এখন কথা শুরু। খোকন বলছে, সে ভূতে বিশ্বাস করে। ভয়ও পায়। বেলাল বলে, এসব কাল্পনিক গল্প। বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। তাই ভূতে ভয়ের কিছু নেই। তাদের মধ্যে তর্ক চলছে। আমার মাথায় হঠাৎই দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো। আস্তে আস্তে পিছিয়ে পড়লাম। নেমে পড়লাম ধানক্ষেতে। তখন ধান ক্ষেতে অনেক দূরে দূরে ধান মাড়াই শেষের খড়ের স্তূপ। কেউ কেউ অস্থায়ী মাঠ বানিয়ে সেখানে মাড়াই শেষের ধান রেখেছেন। কেউ কালো পলিথিন দিয়ে, কেউ খড় দিয়ে ধান ঢেকে রেখেছেন। সামনের মাঠেই পেয়ে গেলা কালো পলিথিন।
মনে মনে বলি—আচ্ছা বেলাল ভূতে ভয় পায় না? দেখাবো মজা। কালো পলিথিন দিয়ে পুরো শরীর ঢেকে ফেললাম। তারা দুজন যে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল, তারই লাগোয়া পশ্চিম পাশ দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে বয়ে গেছে একটি সরু খাল। খালে পানি তো নেই, পরন্তু খটখটে শুকনো। তবে, কুয়াশার কারণে একটু ভেজা।
তারা ততক্ষণে অনেক সামনে চলে গেছে। আপন মনে হাঁটছে তো হাঁটছেই। আমি আছি কিনা, সেই খবর দুজনের কারও নেই। সুযোগটি নিলাম। নেমে গেলাম খালে। মাথা নিচু করে দৌড়ে তাদের চেয়ে অন্তত একশ গজ সামনে গিয়ে থামলাম। একটা নাটাই গাছ ছিল খালপাড়ে, রাস্তার পাশে। সেই নাটাই গাছতলায় কালো পলিথিন মুড়িয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম।
দুজনে গল্পে মশগুল। সামনে-পেছনে, ডানে-বামে কী আছে, কী নেই, সেই হুঁশ নেই। ঠিক নাটাই গাছতলায় আসতেই নাকি সুরে বলে উঠলাম—‘তোঁ-তোঁ-তোঁরাঁ কেঁরেঁ?’ কথাটা বলেছি মাত্র, অমনি ‘ও মা গো ভূ-ভূ-ভূত’ বলেই চিৎকার দিয়েই বেলালের ভোঁ দৌড়। খোকন যেন প্রাণহীন মূর্তি। তার মুখ দিয়ে কথা সরছে না। বিষয়টি দেখে ভড়কে গেছি আমিও। দ্রুত পলিথিন ছুড়ে ফেললাম খালে। কাছে গিয়ে খোকনে হাত ধরে ঝাঁকুনি দেই—‘অ্যাই। অ্যাই খোকন। ভূ-ভূ-ভূত-টূত কিচ্ছু না। আমি, আমি।’ খোকন একবার ধাবমান বেলালের দিকে তাকায়, একবার পেছনে। আরেকবার আমার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আরে বদমাইশ তুই?’
চলবে…