আফাজ মিয়া যখন রেগে যায়, তখন অনর্গল গুলি ছুড়তে থাকে। ওঁৎপেতে থাকা দুর্বল কোনো শিকার ঘায়েল করতে এছাড়া তার আর কোনো উপায় থাকে না। আফাজ মিয়ার মুখ নামক একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে তিনি যে গুলি ছোড়ে, তা কোনো ধাতব নয়, কথার গুলি ছোড়ে।
সেই গুলি একের পর এক বিদ্ধ করে আফাজ মিয়ার একমাত্র ছেলে নিয়ামতকে, সেই ঘাপটি মেরে থাকা শিকার। এই গুলির শব্দে উঠে আসে নিয়ামতের চৌদ্দ গোষ্ঠীর নাম। যদি এতে ‘উড়নচণ্ডী’ ছেলেকে কুপোকাত করা যায়! আফাজের গালিতে যেন পৌরাণিক কাল থেকে উঠে আসে পূর্ব-পুরুষদের লম্বা ইতিহাস। ছেলেকে গালি দিতে গিয়ে আফাজ মিয়া নিজের তিন-চার পুরুষকেও ছাড় দিতে ভোলে না। তার বংশ খারাপ, তা না হলে ছেলে নিয়ামত এমন ‘উড়নচণ্ডী’ হয় কী করে?
গালিতেই উঠে আসে নিয়ামতের জন্মপ্রশ্ন, জাওরা ছেলে জন্মের ঠিক নেই, তোর মায়েরে জিগা তোরে জন্ম দিচে কে? কথা শুনিচ না? কাজে-কামে মন নাই কেবল ভদ্দরলোকের মতো বিনে মাইনেই এপাড়া থেকে ওপাড়া ডিউটি করে বেড়াস। জাওরা ছেলে?
ছেলে তার ‘জাওরা।’ এই পড়ন্ত বিকেলে ছেলের জন্মপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হেঁসেলঘর থেকে একদম তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে আফাজ মিয়ার স্ত্রী খুকি খাতুন। কাঠের তৈরি তেলচিটচিটে খুন্তিটা হাতে নিয়ে রান্নাঘর থেকে ছুটে চলে আসেন আফাজের দিকে। আফাজ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক, সেই উঠোন থেকে রান্নাঘরের দূরত্ব হাত ত্রিশেক। যেন গুলির বেগে খুকি ছুটে যায় আফাজের দিকে। এরপর আফাজের ঠিক মুখোমুখি এসে খোলসছাড়া সাপের মতো ফোঁসফোঁস করেন নিয়ামতের মা। দ্রুতগতির গাড়ির মতো থমকে দাঁড়িয়ে আফাজের মুখের দিকে খুন্তিটা ঘুরিয়ে বলেন, ওই মিনসে ওই, কথা সাবধানে কও। তুমি জানো না ছেলে কার জন্মের? আরেকবার যদি গালি দিছো তো রাতে বুড়োর ভাত বন্ধ।
বউয়ের এমন আক্রমণাত্মকভঙ্গিতে আফাজ মিয়া অপমানিত বোধ করে। কতই বা বয়স হয়েছে আফাজের। হয়তো পঞ্চাশ পার হয়েছে কিংবা আরও দুই একবছর বেশি। যখন গায়ে-গতরে তেজ ছিল তখন তো খুকি একবারও বলেনি সে ‘বুড়ো।’ কাঠের ঘানিতে সরিষার তেল মাড়াই করতে করতে এক সময় জোয়ান গরুটাও বুড়ো হয়ে আসে, দুর্বল হয়ে যায়। আফাজ মিয়া গত ত্রিশ বছর ধরে সংসারের ঘানি টানতে টানতে বুড়োর মতো হতে পারে কথাটি মিছে নয়, তাই বলে সে বুড়ো নয়। বউ যেভাবে তাকে ‘বুড়ো’ বলে অপমান করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। কোনোমতেই এ অপমান সহ্য করা যায় না।
মুখ নামক একে-৪৭টা এবার ছেলের দিক থেকে তাক করে খুকির দিকে. কী কইলি মাগি! ভাতারের ভাত খাস আর ভাতারের শাসন করিস। আলফাজ তার বাম পা’টি ফুটবলে কিক মারার মতো এগিয়ে নেয়। বাম পা’টি কিঞ্চিত এগিয়ে নিতেই তার ডান বগলে থাকা পুরনো কাঠের ক্রাচটি নড়েচড়ে বেসামাল হয়ে পড়ে। আফাজ ক্রাচটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সময় কিকটি এবার হয়ে ওঠে না। এ মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, তার সামনে খুন্তি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যৌবন হারানো নারীটি একটি গোলগাল ফুটবল। যদি কিক মেরে উড়িয়ে দিতে পারতো ওই কাঠবাদামের গাছের তলে। যেখানে তার বেহায়া ছেলেটি আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছে নিশ্চুপ।
শতবর্ষী বটগাছ যেমন ডালপালা-পা হারিয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে তেমনই নিয়ামত কাঠবাদাম গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে আছে। বাপের গালি নামক গুলিতে একের পর এক বিদ্ধ হলেও নিয়ামত তার কোনো প্রতিবাদ করে না। প্রতিবাদ করার ইচ্ছাও তার জাগে না। সে কেবল বেঁটে কাঠবাদাম গাছটির মোটা একটি ডালের দিকে তাকিয়ে আছে।
ক্রাচটি বেসামাল হওয়ার পর থেকে আফাজ মিয়ার রাগ যেন থিতু হতে শুরু করে। সে বুঝেছে, সে অক্ষম মানুষ। সুতরাং ফুটবলে কিক মারতে সে যে সুযোগ খুঁজছে, তা তার বদনাম বয়ে আনবে। এমনিতে বউ তাকে বুড়ো বলেছে, সুতরাং সামনে থাকা মনুষ্যফুটবলটিকে আর নাড়ানোর শক্তি পায় না আফাজ মিয়া, হাত-পা কেমন যেন অবশ হয়ে উঠতে শুরু করেছে। মাঝেমধ্যে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সে গালি দেওয়া শুরু করে। এছাড়া, তার আর কোনো উপায় নেই।
আফাজ মিয়া হলফ করে বলতে পারে, ছেলে নিয়ামত তারই এক যোগ্য উত্তরসূরি। তার জন্ম নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই তার। কিন্তু রাগের সময় আফাজ মিয়া বেমালুম ভুলে যায়। অবশ্য এই রাগটি বেশিদিনের না। গত ছয়মাস ধরে তার এই খিটখিটে ব্যারাম ধরেছে। সে কারণে মুখ দিয়ে অনর্গল কথার গুলি বের হয়। অবশ্য প্রায় প্রতিদিনই তিনজনের ছোট এই সংসারে এই অশান্তি লেগেই থাকে। তার এই অশান্তির কারণ আফাজ মিয়া। এটি বুঝতে পেরে আফাজ মিয়া আর কোনো কথা বাড়ায় না। আফাজ মিয়ার স্বেচ্ছা আত্মসম্পর্ণের বিষয়টি মেনে নিয়ে একটু প্রশান্তি বোধ করে। যেন বর্ষার একঝাপটা বৃষ্টি খুকির ফোস ফোস করা শরীরটায় শান্তির পরশ বুলিয়ে দিলো। সে খুন্তি হাতে আবার হেঁসেলঘরে কাজে মন দেয়। আফাজের সংসারে এই ঝগড়াঝাটি, এই তেড়ে আসা এটি নিত্যদিনের দৃশ্য।
ছয় মাস আগেও আফাজ মিয়া এরকম ছিল না। একটা দুর্ঘটনা তার সর্বনাশ ঘটিয়েছে। যশোর চৌগাছা থেকে ধানবোঝাই নসিমন গাড়ি ডাকবাংলা বাজারের মোয়াজ্জেম মিয়ার রাইচ মিলে যাচ্ছিল আফাজ। পথে শ্যামনগর গ্রামে নুর ইসলামের পুকুরে ধানবোঝাই নসিমন গাড়িটি পড়ে যায়। আগে অন্য জীবিকা থাকলে যান্ত্রিক এই সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এই নসিমন গাড়িটি হয়ে ওঠে আফাজ মিয়ার একমাত্র অবলম্বন। তার উপার্জনে চলে সংসার। চলে মেয়ে ময়না আর ছেলে নিয়ামতের স্কুলখরচ। তাই গত ১০ বছর ধরে এই নসিমন গাড়িটি এনে দেয় সচ্ছলতা। কিন্তু শ্যামনগর গ্রামে এই পুকুরপাড়টির কাছে আসতে কেমন যেন মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে তার। বেপরোয়া ছেলে নিয়ামতের মতোই নসিমন গাড়িটি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। নিয়ম না মানা ষাঁড়ের মতো মাথাটি বেঁকিয়ে নসিমন গাড়িটি নুর ইসলামের পুকুড়ে পড়ে। কোনোমতে আফাজ মিয়া লাফ দিয়ে প্রাণে বাঁচেন। লোকজন ধরাধরি করে তোলার সময় আফাজ মিয়া বাম পায়ে আর কোনো শক্তি পাননি। যারা উদ্ধার করেছিলেন তারা পা টিপে বুঝতে পারেন আতপ চালের গুঁড়োর মতো পায়ের হাঁড় গুড়ো হয়েছে। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় পায়ে পচন ধরে। আফাজ মিয়ার বিশ্বাস চিকিৎসকরা একটু মনোযোগী হলেই হয়ত তার পা’টি বেঁচে যেতো। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক এত ঝুঁকি নিতে চাননি। শেষমেষ পচন ধরা পা’টি ফেলে দিতে হয়েছে তার।
আর খুকি খাতুন ছেলের কান্না শুনে হেঁসেলঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলে, কাঁন্দিস না বাপ। বাপ বুড়ো মানুষ কয়ড্যা কথা কয়েছে। মন খারাপ করিস না। বাপের কথায় বেজার হোস না, আল্লাহ বেজার হবে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার দিন সরকারি কিছু ওষুধ জোটে আফাজের সঙ্গে এই ক্রাচটি। এখন এই ক্রাচটি তার পায়ের ভূমিকায় নেমেছে। আর ছেলে ২২ বছরের ছেলে নিয়ামত সংসারের ‘নিয়ামত’ হিসেবে ধরা দিয়েছে। বাবার পা হারানোর পর থেকে সেই নসিমন গাড়িটি নিয়ামতের হাতে মানিয়েছে। কলেজের পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে নসিমন গাড়িটি নিয়ে ছুটে বেড়ায় বিভিন্ন এলাকা। কিন্তু সমস্যা হলো, সবসময় সে নসিমনটি নিয়ে সে পথে বেরোয় না। কোনো কোনোদিন সে অলস বসে থাকে, চুপচাপ বসে থাকে। সেদিন খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ। আর যেদিন নসিমন গাড়ি নিয়ে বের না হয় সেদিন বাপ তার ওপর রাগারাগি করে। আফাজের মুখ দিয়ে অনর্গল কথার গুলি বের হয়। বাপ যখন তার ঝগড়া করে গালি দেয় ঠিক সে সময় ওই কাঠবাদাম গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে থাকে। আর মোটা ওই ডালটির দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে। বাপ কী বলে সেদিকে মনোযোগ তার নগন্য। কেবল দক্ষিণা বাতাসের মতো মৃদু সুর ভেসে আসে নিয়ামতের কানে। গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে সে তার বোন ময়নার কথা ভাবে। অসুস্থ বাপ হাসপাতাল থেকে ফেরার দিন পাঁচেক পর ময়নাবুবু তার অঘটনটি ঘটিয়ে ফেল। সবাই যখন আফাজ মিয়ার চিন্তায় ব্যস্ত, তখনই ময়নাবুবু নিজের দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়েছে।
নিয়ামতের মনে পড়ে তার বোন ময়নার কথা। জ্যৈষ্ঠ মাসের ভোরে লস্করদের পুকুরপাড়ের আমগাছের নিচে গিয়ে বসে থাকতো ময়না আর নিয়ামত; সে তো অনেক ছোটবেলার কথা। ময়না আর নিয়ামতের বয়সের ব্যবধান বছর দুই। তবু বড় বোনটি তার বন্ধুর মতো। নিয়ামতের মনে পড়ে রাস্তার ধারে এরশাদ মণ্ডলের পচা ডোবায় পড়ে থাকা শাপলা ফুলের কথা। দুই বোনের কত দহরম। ডাহুক পাখির মতো ডুব দিয়ে কিছুক্ষণ পর শাপলার গোড়াসুদ্ধ তুলে আনত দুই ভাইবোন।
বোনের কথা মনে পড়ায় কাঠবাদাম গাছটির তলে দাঁড়িয়ে নিয়ামত কাঁদতে থাকে। এতক্ষণ চেপে রাখা একটা গুমোট কান্নাজুড়ে বসে পুরো বাড়ির উঠোনজুড়ে। আফাজ মিয়া আর কথা বলে কাটা পায়ের গোড়ায় হাত বোলাতে থাকে। আর খুকি খাতুন ছেলের কান্না শুনে হেঁসেলঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলে, কাঁন্দিস না বাপ। বাপ বুড়ো মানুষ কয়ড্যা কথা কয়েছে। মন খারাপ করিস না। বাপের কথায় বেজার হোস না, আল্লাহ বেজার হবে।
‘আল্লাহ বেজার হবে’ এই কথাটি শোনার পর নিয়ামত আলীর কান্না কিছুটা থামে। কারণ সে আল্লাহকে এই মুহূর্তে বেজার করতে চায় না।
ময়নাবুবুর জন্য। আচ্ছা। ময়নাবুবু এই অঘটনটি কেন ঘটালেন? কাঠবাদাম গাছটির তলে ওই ডালে উঠে ২৪ বছরের জীবনটা অকালে শেষ না করলেই কী হতো না? রশি পেঁচিয়ে ওই ডালটিতে ঝুলে পড়ার আগে তার কী একবারও মনে পড়েনি পা হারা বাপের কথা, তার কী একবারও মনে পড়েনি ছোট ভাই নিয়ামতের কথা। একবারও মনে পড়েনি লস্করবাড়ির আমগাছ, এরশাদ মণ্ডলের ডোবা পুকুরটার কথা। একবারও কি মনে পড়েনি ময়নাবুবুর পোষা ছয়টা রাজহাঁসের কথা। নিয়ামত দেখে তার পায়ের ঠিক কাছ দিয়ে ময়নাবুবুর ছয়টা রাজহাঁস হেলেদুলে হেঁটে যাচ্ছে লস্করবাড়ির ডোবা পুকুরটির দিকে।
কেন বোন তার আত্মহত্যা করেছে জানা নেই নিয়ামতের। অবশ্য কারণটি গোটা বাড়ির কেউই জানে না। প্রাণোচ্ছ্বল বোন তার এভাবে নিজেকে শেষ কেন করবে তার উত্তর খোঁজে নিয়ামত। তবে একটা যোগসূত্র মেলানোর চেষ্টা করে। পাশের বাড়ির প্রবাসী ছেলে রিপন এলো। রিপন এসে দিন পনেরো দেশে থেকে আবার চলে যায়। এর দুইদিন পরে বোন তার কাঠবাদাম গাছে ঝুলে পড়ে। লোকমুখে গুঞ্জন রটেছিল বোন তার পোয়াতি, দুই মাসের সন্তান তার পেটে। রিপন আর ময়নার অবৈধ সম্পর্ক ছিল।
অসুস্থ বাপের কানে কোনোভাবেই যেন এই খবরটি না পৌঁছায় সে জন্য ময়না অঘটনটি ঘটিয়েছে। নিয়ামত ভাবে বোন তার সুখে আছে আল্লাহর কাছে। তাই সে এই সে কান্নাকাটি করে আল্লাহকে বেজার করতে চায় না। নিয়ামত তাই চুপচাপ থাকে।
নিয়ামতের মা খুকি খাতুন তখনো ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে। বাপ বোঝে না, মাকে জানতে দেয় না কেন মন খারাপ থাকে নিয়ামতের। নসিমনটি যখন অলস বসে থাকে বাপ তার ভাবে ছেলেটি বাউণ্ডুলে হয়েছে। দুই একদিন পর পর বাপের এই অকারণ অনুশাসন ভালো লাগে না তার। মা ভাবে বাপের বকাঝকায় ছেলে তার কাঁদে। একটা প্রাণোচ্ছল মেয়ে এভাবে সংসার থেকে, পৃথিবী থেকে বিদায় নিল সে বিষয়টি ভুলে গেছে তারা। কিন্তু নিয়ামত ভুলতে পারেনি তার বোনকে। সেও বোনের মতো শান্তি চায়, সে বোনের ডাক অনুভব করে। নিয়ামতের মনে হয় চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সে ঝাপসা চোখে দেখে পায় বোন তার ডাকছে।
নিয়ামত কাঠবাদামটি গাছটি থেকে এবার সরে দাঁড়ায়। এরপর একটু গতি বাড়িয়ে মাকে বলে, মা তুই ঘরে যা। এই বলে ওই পড়ন্ত বিকেলে নিরুদ্দেশ হয় নিয়ামত। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে খুকি তার ছেলের আশায় বসে থাকে। ঘরের বারান্দায় কেরোসিনে জ্বলা পিতলের ল্যাম্পটি মিটমিট জ্বলতে জ্বলতে এক সময় নিভে যায়। নিয়ামত ওইদিন রাতে বাসায় ফেরে না। মধ্যরাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে তখন নিয়ামত কাঠবাদাম গাছে উঠে পড়ে। ডান হাতে থাকা দড়িটা গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে। কাঠবাদাম গাছের ডালে মধ্যরাতে একটা শরীর হাওয়ায় দুলতে থাকা বাবুই পাখির বাসার মতো দুলছে। নিয়ামত কোনো কষ্ট পাচ্ছে না। সে অনুভব করে তাকে তার ময়নাবুবু ডাকছে, আয় ভাই, কাছে আয়।