আকাশমিতা
আকাশমিতা, কী চাও—তুমি কি তা জানো?
এক হাত মাটিতে তোমার, অন্য হাতে কিভাবে আকাশ ছোঁবে বলো? নিজের দুপায়ে একটু দাঁড়াও। নিজের মতন তুমি বাকি পথ হাঁটো…
কোজাগরি রাত গহিন গভীর হলে ধীরে ধীরে উঠে যাও ছাদের আকাশে, তারপর একা হও—ওপরে তাকিয়ে থেকে বুকে হাত রেখে এক বার ভেবে দেখো—তুমি কে? কবি না কবিতা? অকস্মাৎ খুলে গেলে জন্মান্ধ জানালা কার ঘ্রাণে দোল খায় আকুল হৃদয়! বিষয় বিন্যাস থেকে অনতি দূরত্বে থেকে আয়ুর অক্ষর চুষে পাঠ করো ফের—দ্বিখণ্ডিত নিয়তির মুখ—কবির অসুখ!
পঞ্চাশ বালামজুড়ে বেশ তো কুশলে আছ—দেখিলাম, চোখের কাজল কোণে দ্বিধান্বিত দীর্ঘশ্বাস ধূসর ধোঁয়ায় নীল; রুদ্ধ বাতায়নে নেমে এলে খেয়ালের ‘ঝড়’ চিরদিন দীর্ঘজীবী হয় আকাশ ও মেঘের সঙ্গম; সমুদ্রে উড়াল দেয় ফাঁদছেঁড়া এক অকিঞ্চিৎ পাখি…
মনটানা গ্রামে
পুনশ্চ আঁধার ঠেলে বেল বেজে ওঠে—তুমি দিল্লি যাবে একথা জানানো চাই;
আকাশ শূন্যতা ছাড়া আর কিছু নয়;
শূন্যতা পূরণ করে ঊষর জমিনে তুমি দুহাত বাড়িয়ে দিয়ে যে সাঁকো গড়েছ তার কোনো তল নেই অদৃশ্যে অজর।
মেঘের বাদাম তুলে হেঁটে যেতে যেতে কুটুম্ব রোদের সাথে কোলাকুলি করে কী কুশল রেখে যাও বলো নিরুদ্ধ নন্দনে—নিশীথে বকুল ডালে অহেতুক জাগে ওই অনিকেত ঘুঘু।
কেরালা সমুদ্রতটে খুব একা হয়ে গিয়েছিলে; এই ভাবে একা হতে যেয়ে সময়ের করতলে লিখে রেখে স্বতন্ত্র সনেট ছায়ার সীমানা ভুলে ছুটে যেতে রোজ—আঁধারে জোছনা বোনা শাদা শাপলার দিঘি— মনটানা গ্রামে।
বয়স
সময়কে কেউ কেউ স্মৃতি নামে ডাকে—
সে তটিনী;
সবুজ গ্রহটি ক্রমে হলুদ হয়ে এলে মরে যায় তারা ফুল নদী,
পাহাড় মেঘের মত ওড়ে; গাছেদের পেশিগুলো ঝুলে পড়ে ঝড়ে—বাকলে উল্কি আঁকে দুপুরের ডানা…
মেঘ তো জলের বোন—হাওয়ার মেয়ে;
আকাশকে নদী তীরে রেখে প্রত্যহ সন্ধ্যায় অভিসারে যায় নেয়েদের গাঁয়ে।
অবনির বয়স বাড়ে—কবির বাড়ে না; প্রদোষে হিসেব শেষে মেঘের বয়স সবে উজালা উনিশ!