॥পর্ব-২৩॥
বেশ ক’দিন সে ঢাকায় ছিল। প্রতিদিন বিকেল বেলা এখানে তার আসা-যাওয়া। আমিও ধীরে ধীরে সহজ হতে শুরু করি। প্রতিদিন পাওয়া একটি করে গোলাপ আমাকে কেবলই অসাম্য অসংলগ্ন করে তুলতে থাকে। আমি ২১৮ নম্বর রুমে ডাবলিং। নামে ডাবলিং হলেও খুব আরামে থাকি। একদম নিজের মতো করে। অন্য ডাবলিংরা যেমন খুব গুঁটিশুটি মেরে থাকে, তেমন নয়। মনে হয় এ আমার নিজেরই রুম। নিজের মতো করে বিছানা গুছাই। নিজের মতো করে টেবিল। গোলাপ পেতে ততদিনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। খুব যত্ন করে আমি একদিন পড়ার টেবিলের ওপর সাজাই গোলাপ। খুব সংকোচে। ভীষণ দ্বিধায়। কে কী ভাববে! কী বলে বসবে, এসব ভাবি। তবু ফুলগুলো আমি ফেলে দিতে পারি না। সাজিয়ে রাখার লোভও সামলাতে পারি না।
একদিন খুব দ্বিধান্বিত চিত্ত আমার। বাড়ি থেকে নিয়ে আসা একটা অনেক পুরনো ফুলদানি বের করি ট্রাংক থেকে। মায়ের বিয়ের সময় পাওয়া ফুলদানি। মা খালাদের যখন বিয়ে হয়েছিল, তখন বোধ করি এমনই জিনিস ছিল। টিনের একটা গোল্ডেন রঙের ফুলদানি। হাত দিয়ে না ধরলে বোঝা যায় না ওটা টিনের। কেন যে ওটা আমার এত ভালোলাগার, আজও বুঝিয়ে বলতে পারবো না। আমি একটু সেকেলে তখন থেকেই। পুরনো ট্র্যাডিশনাল অনেক কিছু আমার প্রিয় জিনিস। যেমন মায়ের বিয়ের শাড়ি। যে শাড়িটা মাকে কোনোদিন পরতে দেখিনি আর। সেটা প্রায়ই খুলে দেখি। মায়ের পুরনো শাড়ি। সেই তখনকার শিফন। হালকা আকাশি। বেশি করে নীল। কম করে সবুজ আর সাদায়। সেই শিফন শাড়ি আমার বড় প্রিয়। কত কত শাড়ি তারপরেও মা কিনেছেন। কিন্তু আলামারিতে তুলে রাখা সেই শাড়ি আজও আমাকে খুব বেশি টানে। মায়ের অনেক ব্যবহার করা ফুলদানি আমার প্রিয়।
মায়ের পুরনো নাকফুল আমার প্রিয়। যদিও তার নাকে কোনোদিন আমি কোনো নাকফুল দেখিনি। আমাদের বাড়িতে মানে মা খালারা কখনো নাকফুল পরতেন না। কখনো আমাদের শেখানো হয়নি যে নাকফুল না পরলে চলে না। আমাদের কখনো বলা হয়নি বিবাহিত নারী মাত্রই নাকফুল পড়তে হয়। আমাদের বলা হয়নি কোনোদিন যে নাকফুল না পরলে স্বামীর অমঙ্গল হয়। মেয়েদের নিঃশ্বাসে বিষ থাকে। যা নাকফুলের সোনায় লেগে পরিশুদ্ধ হয়ে স্বামীর গায়ে লাগাই নিয়ম। কেউ বলেনি। স্ত্রীর নাকে নাকফুল না থাকলে স্বামীর রোগ বালাই লেগেই থাকে। কেউ বলেনি। আমার সেই নাকফুল না পরা মায়ের স্বামী মানে আমার বাবা বেঁচে ছিলেন ৮৫ বছর। আমার নাকফুল না পরা ছোট খালার বর মারা গেছেন ৮২ বছর বয়সে। নাকফুল না পরা বড় খালার স্বামী মারা গেছেন প্রায় ৯০ বছর বয়সে। আমার বাবা আর তিন খালুই খুব বেশি কোনোদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে থেকেছেন আমার মনে পড়ে না। এসব নিয়ে কোনো প্রশ্নই আমার মনে উত্থিত হয়নি। বহু বছর পর আমার বিয়ের পরদিন আমার শ্বশুড়বাড়ির ছুটা কাজের বুয়া তা স্মরণ করিয়েছিল। আমার শাশুড়ির সামনে বসে বলছিল,
ওমা তুমি কি জানো না বিয়াত্তা মাইয়া নাকফুল পড়ন লাগে! তুমার মা খালারা কি কিছুই তুমারে শিখায় নাই! তোমার কারণে তুমার স্বামীর অমঙ্গল হইবো তো।
আমাদের কারও বিয়েতেও এমন দেখিনি যে, নাকফুটো না থাকার কারণে বিয়েতে ঝামেলা হয়েছে। পরে, আরও অনেক পরে এও দেখেছি নারীর নাকফুল কী ভীষণ দরকারি! কী ভীষণ ভয়ানক একটি বিয়ের দলিল! বিবাহিত নারীর সতীত্বের কী ভয়ানক পরিচয় এই নাকফুল। যেটা আমাদের সংস্কৃতি কিংবা শিক্ষায় একেবারেই অর্থহীন। একটা বিষয় হয়ে পড়ে রয়েছে অনেক কাল। কিন্তু মায়ের বিয়ের সময় পাওয়া একটা পাঞ্চড্ নাকফুল ছিল। ওটা আমার খুব প্রিয়। মায়ের হাতে সেলাই করার সুতা। সেলাই ফ্রেম। কুশীকাটা। বছর বছর মায়ের হাতে বোনা নতুন সোয়েটার। মায়ের হাতে সোনালি জরিতে আঁকা তাজমহলের ছবি। তাতে জরির সুতায় মায়ের হাতের কারুকাজে লেখা,
তাজমহলের পাথর দেখেছ। দেখেছ কী তার প্রাণ!
অন্তরে তার মমতাজ নারী, বাহিরেতে শাজাহান।
যখন আমি খুব ছোট। একদিন স্কুলের একটা ফাংশন। এখন মনেও নেই কী প্রতিযোগিতা ছিল, সেটা। আমি লিচুচোর কবিতা পড়ব। আমাকে মা-ই তৈরি করলেন। আবৃত্তি শিখিয়ে দিলেন। মুখস্থ করিয়ে দিলেন। অনেক রাতের অন্ধকারে ইলেকট্রিসিটি চলে গেছে হয়তো। তখন আইপিএসের যুগ নয়। লালমাইর কোলে ইলেকট্রিসিটি চলে গেলে ভুতুরে অন্ধকার নেমে আসতো চারপাশে। মা মোমবাতি জ্বালিয়ে আমাকে কবিতা পড়াতেন। আমার ঝাঁকড়া কোকড়ানো চুল সারাদিন যা বাঁধা হতো না, কিন্তু রাতে ঘুমানোর আগে আগে মা নিজের হাতে খুব টান করে আমার চুল বাঁধতেন। নিজ হাতে। আমাদের বাড়ির সবার চুল সোজা। একমাত্র আমিই দাদির উত্তরাধিকার স্বরূপ পেয়েছিলাম ওই ঝাঁকড়া ঘন কোকড়ানো চুল। তাই মার চেষ্টা কত কী করে তাকে সোজা করা যায়। ওই ঝাঁকড়া চুল দুলিয়ে মোমের আলোতে আমি পড়ছিলাম লিচুচোর। মোমের উদোম আলোতে ঝুঁকে ঝুঁকে। কখন লেগেছিল আগুন চুলে! জানি না। কতটা নেশাগ্রস্ত সেই সময় থেকে কবিতার। তা আজ বুঝতে পারি। আগুনে পুড়ে পুড়ে বিকট ঘ্রাণ বের হয়েছিল চুলের। সেই মধ্যরাতের কবিতা।
মায়ের পরিশ্রমে আমার মুখে উঠে আসা কবিতা পড়ে ছ’বছর বয়সে আমি প্রথম পুরস্কার পাই। আর সেই পুরস্কার নেই বাম হাতে। পুরো সরকারি কলোনিতে তখন ঢি ঢি পড়ে যায়। আমি বাম হাতে প্রাইজ নিয়েছি। মা কিছু শেখাননি আমাকে। আমি কিছু বুঝতে পারি না। আমার মন খারাপ হয় খুব। আমি লজ্জিত অধোঃবদনে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকি মায়ের সামনে। যখন মায়ের কাছে শুনি পাশের বাড়ির খালাম্মা কী কী বলেছেন, এই নিয়ে। অবশেষে হাসি এই শুনে—মা বলেন,
হাত মানুষের দুটোই। সমান তার ব্যবহার। যদি তা খারাপ কাজে ব্যবহার না হয়। আমার মেয়ে বাম হাতে পুরস্কার নিয়েছে। খুব খারাপ কাজ করেনি। আমার মেয়ের মনে হয়েছে, এই হাতটাই তার দরকারি বেশি। এই হাতটাই তার প্রয়োজনে বেশি।
সেদিন অত সহজ করে বুঝতে পারিনি কথাটা। কিন্তু খুব খুশি হয়েছিলাম। খুব আনন্দিত হয়েছিলাম। সবাই যখন আমার প্রথম এচিভমেন্টে জল ঢেলে ছোট থেকে ছোট করে দিচ্ছিল মন, আমি মাকে খুব ছোট করেছি ভেবে ভেবে তখন আমি লজ্জিত, বিষণ্ন, বিব্রত। অধোবদন ভেতরে ভেতরে। অথচ ছোট মানুষ। বুঝিয়ে বলতে পারছি না কিছুই। সইতে পারছি না বিভ্রান্তির যাতনা। বিকেলে মাঠে খেলতে গেলেও বন্ধুদের কাছে হাসির পাত্র হচ্ছি। সে যাতনার কথা ক’জনই বা জানে। কিন্তু আমার মা হয়তো ধরতে পেরেছিলেন তার সব। তিনিই আমাকে সেদিন উদ্ধার করেছিলেন এই সব উপহাস থেকে। তুলে দিয়েছিলেন নিজের কাছে নীচু হয়ে থাকা আমার মাথা। আর পরবর্তী সময়ে।আজ এই এখন অবধি বা হাতেই আমার শক্তি সবচেয়ে বেশি। ডান হাতটি যেন আমার কেটে পড়ে গেছে কোথায়। কিংবা কেউ খুব যত্ন করে যুগ যুগ ধরে ভীষণ পরিকল্পিতভাবে কেটে নিয়েছে আমার ডান হাত। তবু আমি শংসপ্তক। আজও শুধু বাম হাতেই ধরে রেখেছি নিজের আর দুই কন্যার জীবন। এখনো এই অনুভব প্রতিক্ষণে।
তেমনি সেই ফুলদানি আমার। আমি সেটা নিয়ে এসেছিলাম হলে আসার সময়। তাতেই সাজাই প্রথম ভালোবাসার সব উপহার। আমার চিরকালের প্রিয় ফুল। এই ফুল নিয়ে অনেক কথা আছে আরও। পেছনে ও পরেও। সে কথা লিখব দিনে দিনে। পাপ্পামেলনের সুবাসে ঘর ভরে তুলি আমি। ফুলদানিতে পড়ে থাকে শুকনো ফুলও। তার চলে যাওয়ার দিন আসতে থাকে। এই ক’দিনে মনে পড়ে না একবারও সেই মধুরীমার কথা। হঠাৎ একদিন বিকেল। আমি রুমের জানালায় বসে। দু’শ আঠারো নম্বর রুমটি বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের পেছনের দিকের দালানের অবস্থিত। সেখান থেকে দেখা যায় অনেক দূর। নীলক্ষেত মোড় ধরে বিডিআর তিন নম্বর গেটের দিকে সামনে আগালে চারুকলার শাহনেওয়াজ হল ছাড়ার পর নিউ মার্কেট পেরিয়ে ফুট পাথ ধরে চলতে থাকা মানুষ দূর থেকে দেখা যায়। দেখি দূর থেকে কেউ একজন আসছে তার সঙ্গে। হয়তো হবে কোনো বন্ধু বা সাথী কেউ। আমি না বুঝেই নিচে নেমে আসতে থাকি। গেট পার হয়ে এসে দেখি তার সঙ্গে দাঁড়ানো, পাশে পাশে দাঁড়ানো সেই সুন্দর, সেই সুহাসিনী। ফরসা হাতে লাল নীল কাঁচের চুড়ি তার। রিনরিন করে বাজে। তাকে আগেও দেখেছি একবার। মুখে প্রশান্তির হাসি। আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমি কাঁদতে পারি না। আমি রাগ হতে পারি না। আমি চলে যেতে পারি না। আজন্ম সংস্কার আর শিক্ষিত রুচিবোধ আমাকে বাধা দেয়। ভেতরে আমার যতই ঠাণ্ডা স্থির অনুভূতি তারচেয়েও ঠাণ্ডা রাখি গলার স্বর। এটা চিরকালের আত্মসম্মান বোধের জায়গা আমার। ক্ষরণ দহন যা চলছে ঠিক তারই বিপরীত এক রূপ নিয়ে আমি বাইরে আবির্ভূত হই। এ আমার চরিত্র। অনেক ছোটবেলা থেকেই তৈরি হয়ে রয়েছে। হয়তো রক্তই বহন করে এনেছে আমার মধ্যে এইসব। তাই বাইরে কেউ দেখে না। কিছু দেখে না। সহজে কেউ দেখে না আমার চোখেরও জল। হৃদয় গলে যাওয়া লাভার আগুন আমি খুব সামলে রাখি। যত্নে রাখি একাই। বরাবর। আমি প্রশ্ন করি,
কেমন আছ?
ভালো আছি
আপনি?
ভালো।
বসো।
ঠিক আছে।
ঘাসের মাঠে বসি তিন জনেই। কিছুক্ষণ গল্প হয়। কী গল্প। আজ মনে করতে পারি না তার কিছুই। শুধু মনে আছে সেদিন মনের ভেতর একটি কথার উদয় হয়। কবি কি তবে ঠিক যোগাযোগ রাখছে তার সঙ্গে। অবশ্য আমার সঙ্গে তো এমন কোনো কথা হয়নি। তারা যোগে থাকবে কী বিয়োগে? ঢাকা শহরের এক প্রান্তে আমার হল। আর অন্য আর এক প্রান্তে তার বাড়ি। সেখানে গিয়ে তাকে নিয়ে এসেছে যেহেতু… । বিকেল ফুরোয়। অন্ধকার গাঢ় হয়। গাঢ় হয় বুকের ভেতর যাতনারও বিষ।
মনে পড়ে বাড়ি ছেড়ে যখন প্রথম বাইরে আসি। মা বলেছিলেন,
প্রথম বাইরে যাচ্ছ। বয়স সতেরো তোমার। অনেক কিছুই বোঝার বয়স নয় এটা।
হুম।
আমি এটা সেটা গুছাতে গুছাতে জবাব দেই। তিনি আবার বলতে থাকেন,
নিজের সব নিজে করতে হবে। আমি বা আমরা তোমার সব খেয়াল রাখতে পারব না। অতদূর থেকে। খোঁজ করতে পারব না।
তখন কী করব মা?
অসুখ-বিসুখ সমস্যা, পড়ালেখা সব একার সিদ্ধান্তে করতে হবে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভরসা করার মতো কেউ তোমার কাছে নেই। সব একা করার সময় এখন তোমার।
আমি কাজ গুছাতে গুছাতে একটু থামি। আবার মায়ের কথার রেশ ধরি,
হুম। তাই তো।
মা বলেই চলেন, বুঝে চলতে হবে খুব। বুঝে চলো কিন্তু।
আমি মায়ের চোখে তাকিয়ে আবার বলি, ঠিক আছে।
আমাদের খুব ছোটবেলায় শেখানো হয়েছে কেউ কথা বললে তার চোখে চেয়ে কথা শুনতে হয়। না হলে বেয়াদবি হয়। আমি তাই কথার ফাঁকে ফাঁকে মায়ের দিকে তাকাচ্ছিলাম। তার কথায় হ্যাঁ-হুম এসব বলছিলাম। আমার মা কিন্তু এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলছিলেন। হয়তো মনে কষ্টও হচ্ছিল খুব। তার প্রকাশ ছিল খুবই সংযত। যদিও, সত্যি বলছি, সেদিন এই কষ্ট আমি বুঝতে পারিনি। যা এত বছর পর আজ দুটি কন্যার মা হয়ে অনুধাবন করতে পারছি। তার চার ছেলে। দুই মেয়ের মধ্যে আমি ছোট। তার খুব ইচ্ছে ছিল অন্তত একটি মেয়ে তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাক। গায়ে মাখুক বিশাল কোনো আঙনের বাতাস। বড় বড় বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে নিক জীবনের পাঠ। তার সেই স্বপ্ন হয়তো পূরণ হতে চলেছে আজ।বাকি জীবনে যে কষ্ট দিয়েছি তাকে এই এতটুকু স্বপ্ন পূরণে তিনি ব্যালেন্স করতে পেরেছেন কি না, তার সব? আমার নিজের কাছে এ প্রশ্নে উত্তর হলো—না । কখনো নয়। কিছুক্ষণ মা থেমে ছিলেন। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। হয়তো যে কথাটা বলব-বলব করছিল তার মন। সে কথা মুখে আনতে খানিক দ্বিধা। তবু মা তো। সব দ্বিধা ঝেড়ে একটা কথাই তখন বলেছিলেন, অনেক ছেলের সাথেও চলতে হবে তোমার।
জি।
প্রেমেও পড়ে যেতে পারো কারও।
এ কথা শুনে আমি লজ্জায় লাল হতে থাকি। খানিক ভয়ও পেতে থাকি। ভাবি, মা কি আমায় পরীক্ষা করছেন? তিনি আসলে কিছুই বুঝতে পারেননি তাহলে? যাক্। বাঁচা গেল। তারপরই তিনি উচ্চারণ করলেন সেই অমোঘ মন্ত্রবাণী, কাকে ভালোবাসবে, কাকে পছন্দ করবে, সে বুঝে-শুনে করবে। যেন আমরাও তোমার পছন্দে সায় দিতে পারি। যেন পরিবারের মান রক্ষাও হয়। তোমাদেরও মনে কষ্ট না হয়।
আমি মুগ্ধ। আমি অবাক। এই তাহলে আমার মা। মায়ের কথায় গৌরবে আমার মাথা উঁচু হয়ে যায়। কিন্তু সেদিনও বুঝতে পারিনি কী মারাত্মক সে মোহমন্ত্র! এত সাধারণ! এত গভীর! এত শান্ত আমার মা! সন্তানকে কী শিক্ষায় কী মায়ায় কী বাঁধনে বেঁধে তারপর ছেড়ে দিতে হয় দূরে। সে আমার মা জানেন। পরে বাকি সারাটি জীবনে তা বুঝে উঠতে পেরেছি। আর পদে পদে স্মরণ করেছি তাকে। তবে সে অনেক ভোগার পর। অনেক যাতনায় নিঃশেষ হওয়ার পর।
চলবে…