ঋণ দিয়েছি সুখ ঋণ দিয়েছি সুখ
দুঃখগুলো ঋণ নিয়েছি ঋণ দিয়েছি সুখ
ভালোবেসে চাই ভরাতে তোমার শূন্য বুক
উষ্ণতা নাও হিম হৃদয়ে বাড়িয়ে দিলাম হাত
পায়ের নিচের মাটি হলাম, মাথার ওপর ছাদ!
বিপুল বিশ্বহৃদয় আমার আপন করে নাও
স্বপ্ন-সূতোয় বুনব জীবন যেমনি তুমি চাও
মনের কাছে মন পেতেছি হাতের কাছে হাত
তারার বাসর সাজিয়ে তোমার রাঙিয়ে দেব রাত।
জ্যোৎস্না কিরণ মাখিয়ে দেব জলজবা ওই ঠোঁটে
দেখবে কেমন আমার ছোঁয়ায় স্বপ্নকুঁড়ি ফোটে
বন্ধু আমি, ভক্ত আমি আমিই সাথের সাথী
অন্ধকারে শলতে হয়ে জ্বলব আলোর বাতি!
প্রস্থান শোক
একটি বার ‘বিদায়’ বলতে পারিনি তোমায়
কিছু ফুল হাতে নিয়ে শেষবার দেখব বলে
যাইনি তো ছুটে শহীদ মিনার কিংবা বাংলা একাডেমির চত্বরে
তোমার কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে করিনি ক’ফোটা অশ্রু বিসর্জন!
কেন যাব বলো? কেন দেব বিদায়ের শেষ ফুল?
কেন নেব মেনে, না ফেরার দেশে চলে গেছ তুমি?
এইতো এখানে আছো, জ্বলে থাকা অনুভবে-বিনম্র শ্রদ্ধায়!
জীবনের অলিগলি, মনোগত সীমা-পরিসীমাজুড়ে
দাঁড়িয়ে আছে কত অসমাপ্ত গল্পের মুখ!
দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তিতে আজ বড় অবসন্ন তুমি
অন্তহীন অনিদ্রায় ক্লান্ত দু’চোখ
নির্জনতা ভালোবেসে ঘুমুতে চেয়েছো বলে আজ
পাখিরা নিশ্চুপ, পাতার বেহালায় থেমে গেছে বাতাসের সুর
শিউলি ছাতিম আর শেফালির ঘ্রাণময় শরতের শেষ বিকেলে
কাশফুলের কোমল আবেশে গেছো মিশে!
নির্জনতা ভালোবেসে ঘুমুতে চেয়েছো বলে
চায়ের পেয়ালা হাতে বলিনি তো ডেকে
উঠে এসো, আঙিনায় গিয়ে বসব দু’জন মুখোমুখি!
তোমার প্রস্থান শোকে কাঁদে পথ, কাঁদে মাটি, আপামর সবুজ স্বদেশ
চোখের কিনারে এসে ফিরে যায় প্রবল কান্নার ঢেউ
শোকের বুননে আজ দুঃখ অবদমনের দিন…
সে এবং বৃষ্টি
শ্রাবণবেলায় গান গেয়ে যায় কাজল মেঘের বৃষ্টি
বিভোর এমন কার ভাবনায় উদাস হলো দৃষ্টি
কী অভিমান! কাঁদছে বুকে একাকী নিঃশ্চুপ
আজ সারাদিন কার কথাটি পড়ছে মনে খুব?
বৃষ্টিভেজা হিমেল হাওয়ায় খুব চেনা এক গন্ধ
রুম ঝুমা ঝুম নৃত্যকলায় বৃষ্টি তোলে ছন্দ
ডাকছে আমায় কে যেন আজ মোহন বাঁশীর সুরে
বৃষ্টি আমায় যাওগো নিয়ে সেই সে স্বপন পুরে।
সে জন এবং বৃষ্টি দু’জন ভীষণ কাছাকাছি
দূর বনে এক অচিন কেয়া একলা ফুটে আছি।